রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে অধ্যক্ষ নিগ্রহে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-সমর্থকের নামে এখনও, ঘটনার পরে বছর গড়ালেও পুলিশ আদালতে চার্জশিট পেশ করতে পারেনি। তাই পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। সম্প্রতি, বিষয়টি জানতে পেরে রায়গঞ্জে দলীয় বৈঠকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। এর পরেই ওই মামলার চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পাশাপাশি, তৃণমূলের নেতা সমর্থকরা কলেজে ঢুকে যাকে নিগ্রহ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল, কলেজের তৎকালীন সেই অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের প্রাক্তন উত্তর দিনাজপুর জেলা কার্যনির্বাহী সভাপতি তিলক চৌধুরী ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা পর্যবেক্ষক প্রিয়ব্রত দুবের নেতৃত্বে একদল তৃণমূল সমর্থক কলেজে ঢুকে আমাকে ঘর থেকে টেনে হেঁচড়ে বাইরে বার করে লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করেন। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাজ্য সরকার ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা দায়ের করে। আশা করেছিলাম তিন মাসের মধ্যেই ওই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা পড়বে। কিন্তু এই ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলার চার্জশিট আদালতে পেশ করতে না পারার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।” উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচাকে ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামাণিক বলেন, “তিন মাসের মধ্যেই কোনও মামলার চার্জশিট আদালতে পেশ করতে হবে এমন কোনও সরকারি বাধ্যবাধকতা নেই। তদন্তের স্বার্থে চার্জশিট জমা দিতে দেরি হতেই পারে। তবে ওই মামলার তদন্ত প্রায় শেষের পথে। সময়মতো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়বে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরের মধ্যে রায়গঞ্জ থানার ৩ জন আইসি বদলি হন। ফলে, তদন্তের কাজে বিঘ্ন ঘটেছে বলে পুলিশের দাবি। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ জানুয়ারি তিলকবাবু ও প্রিয়ব্রতবাবুর নেতৃত্বে একদল তৃণমূল সমর্থক কলেজে ঢুকে তৎকালীন অধ্যক্ষ দিলীপবাবুকে নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। ক’দিন পর তিলকবাবু ও প্রিয়ব্রতবাবু রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে দিলীপবাবু অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। বেশি কিছু বলব না।” যদিও তিলকবাবু ও প্রিয়ব্রতবাবুর দাবি, “কংগ্রেসের প্ররোচনায় দুষ্কৃতীরা আমাদের বিক্ষোভে ঢুকে অধ্যক্ষকে নিগ্রহ করেছিলেন। আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।” এই বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্ন জানান, কারা অধ্যক্ষকে নিগ্রহ করেছিল তা সবাই জানেন, ছবিও দেখেছেন। |