|
|
|
|
বন্ধ বাগানে সমীক্ষা করবে রাজ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
উত্তরবঙ্গের চারটি বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক এবং বাসিন্দাদের সংখ্যা আদতে ঠিক ক’জন, তা খতিয়ে দেখতে সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য খাদ্য দফতর। ওই সমীক্ষায় খাদ্য দফতরের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর, শ্রম দফতরের অফিসারেরাও থাকবেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিলিগুড়িতে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব উপস্থিতিতে একটি প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়টি স্থির হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “চারটি বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক সংখ্যা নিয়ে আমাদের হাতে একটি হিসাব এসেছে। কিন্তু দফতর থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে পুরানো হিসাব ধরে। তাতে বিরাট ফারাক রয়েছে। আমাদের হিসাব যদি সঠিক হয়, তাহলে প্রতিমাসে সরকারের আড়াই কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এটা খতিয়ে দেখতেই সমীক্ষা শুরু করা হচ্ছে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমাদের হিসাবে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা সরকারের বাঁচতে পারে। এই টাকা মানুষের অন্য উন্নয়নে খরচ করা সম্ভব হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব সমীক্ষা করে সংখ্যাটা ঠিক করা হবে।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় দলমোড়, ঢেকলাপাড়া এবং দার্জিলিং জেলায় রিংটং, কাঞ্চন ভিউ চা বাগান দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বাগানগুলির শ্রমিক এবং বাসিন্দাদের জন্য সরকার ২০০৫ সাল থেকে অন্ত্যোদয় যোজনার আওতায় রেশনে সপ্তাহে মাথাপিছু ১২৫০ গ্রাম চাল এবং ৭৫০ গ্রাম গম বরাদ্দ করে। ৯১ হাজার জনকে প্রকল্পের আওতায় সাহায্য করা হয়। কিন্তু খাদ্য দফতরের হিসাবে সংখ্যাটি সাড়ে ১৭ হাজারের থেকে কোনও মতেই বেশি নয়। শ্রম দফতরও গত নভেম্বর মাসে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে সংখ্যাটি সাড়ে ১৭ হাজারের মতই। গত ৯ বছর ধরে প্রায় লক্ষাধিক বাসিন্দাকে চাল, গম দেওয়া হলেও সঠিক সংখ্যা না বার করে তা বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে খাদ্যমন্ত্রী জানান। তিনি জানান, বামফ্রন্ট আমলে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটরদের চক্র রয়েছে। বিশেষ করে কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলায় বাম নেতারা দফতরের মন্ত্রী থাকায় তা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি আদেশ জারি করে বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কোচবিহারে এমন একটি কেরোসিন তেলের ৫৩ জনের নাম মিলেছে। যারা কার্ড ছাড়াই মাসে ৪০০ লিটার করে তেল তুলছে। বিষয়টি নিয়ে মামলাও রয়েছে। শুধু কেরোসিন নিয়ে রাজ্যে ৮৪১টি মামলা চলছে। সরকারি আইনজীবীদের প্রভাবিত করে মামলা ঝুলিয়ে রাখার ঘটনাও ঘটেছে। সব সামলাতে আমাদের লিগ্যাল সেলও খুলতে হয়েছে। আর শহর গ্রামে দুর্নীতি রুখতে ‘শপ লেভেল মনিটারিং কমিটি’ গড়া হচ্ছে। তাতে গুদাম থেকে মালপত্র নেওয়া থেকে বিলি অবধি নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে। উত্তরবঙ্গে এই কমিটির কাজ প্রায় শেষের পথে বলে মন্ত্রীর দাবি। এ ছাড়া সরকারি প্রকল্পের আওতায় যৌনকর্মী, কুষ্ঠরোগী, এইডস রোগীকে সপ্তাহে ২ কেজি করে চাল-গম দেওয়া নিয়েও সমস্যার পড়তে হচ্ছে বলে খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি জানান, যৌনকর্মী, কুষ্ঠরোগীদের নিয়ে সমস্যা না হলেও এডস আক্রান্তদের পরিচয় সামনে আসার ভয়ে অনেকে তা নিতে চাইছেন না। দার্জিলিং জেলায় এই সমস্যা রয়েছে। ঠিক করেছি, যেখানে রোগীদের চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা হয় সেখানে তাঁদের গোপনে কার্ড দেওয়া হবে। |
|
|
|
|
|