ভারতীয় টেনিসের বিদ্রোহী প্লেয়ার জোটের প্রতি এআইটিএ-র শীর্ষ গোষ্ঠীর একাংশের সহমর্মিতার ব্যাপারটা দিনের আলোর মতো এখন পরিষ্কার। কোরিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় ডেভিস কাপ দলের নির্বাচনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের হস্তক্ষেপ আবেদন করে এ দিন মহেশ-সোমদেবদের এগারো প্লেয়ারের জোট দেশের ক্রীড়ামন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা এআইটিএ-র বিরুদ্ধে যুদ্ধে রণে ভঙ্গ তো দিচ্ছেনই না, বরং নির্বাচিত ডেভিস কাপ দলকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি তাৎপর্যের, এআইটিএ-র অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট কার্তি চিদম্বরম-ও এ দিন ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদ্রোহী জোটের প্রায় অনুরূপ একটি চিঠি কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছেন। যা নিয়ে ভারতীয় টেনিসমহলে হইচই পড়ে যায়। স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এআইটিএ-র অন্দরেই বিদ্রোহী প্লেয়ার জোটের প্রতি সমর্থন রয়েছে। এবং সেটাও ফেডারেশনের বেশ শীর্ষমহলের সমর্থন।
যদিও দিল্লিতে ক্রীড়া সচিব পি কে দেব এ দিনই মহেশ-কীর্তিদেরদের আশায় মোটামুটি জল ঢেলে দিয়েছেন। বলেছেন, “দল নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের মাথা গলানোর কোনও এক্তিয়ার নেই। এটা পুরোপুরি এআইটিএ-র ব্যাপার।” কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি এ চিদম্বরমের পুত্র একটু ঘুরিয়ে চিঠিতে লিখেছেন, “যেখানে ডেভিস কাপের নিয়ম মতো ম্যাচের ন্যূনতম দশ দিন আগে পর্যন্ত দল ঘোষণা করা যায়, সেখানে ১ ফেব্রুয়ারি শুরু কোরিয়া ম্যাচের জন্য এত সাততাড়াতাড়ি দল গড়ার কী দরকার ছিল এআইটিএ-র? আমাদের হাতে তো ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় ছিল দল নির্বাচনের। সে ক্ষেত্রে আমাদের এই সময়ের মাঝে দেশের সব টেনিস প্লেয়ারের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধানের রাস্তায় আসার একটা সুযোগ থাকত।” |
কার্তি চিদম্বরম তামিলনাড়ু টেনিস সংস্থারও ভাইস প্রেসিডেন্ট। নিজের রাজ্য সংস্থাকে এ ব্যাপারে টেনে এনে তিনি চিঠিতে বলেছেন, “টিএনটিএ মনে করছে, দল নির্বাচনের বাড়তি সময়টুকু হেলায় নষ্ট করে এআইটিএ যেমন ক্ষুব্ধ প্লেয়ারদের সঙ্গে একটা রফায় আসার সুযোগ হারিয়েছে, তেমনই চটজলদি দল নির্বাচন কোরিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের হারকে প্রায় নিশ্চিত করে তুলেছে।”
এগারো বিদ্রোহী প্লেয়ার কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, “লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় টেনিস দল নির্বাচনের সময়ের মতো কোরিয়ার বিরুদ্ধে আসন্ন ডেভিস কাপের দল নির্বাচনের ব্যাপারেও যেন কেন্দ্রীয় সরকার দয়া করে হস্তক্ষেপ করে।” সোজা কথায়, মহেশদের বিদ্রোহী জোট নতুন করে ডেভিস কাপ দল নির্বাচনের দাবি তুলেছে আর তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চায়। ক্রীড়ামন্ত্রক কিন্তু বলেছে, “আমরা বড়জোর মৌখিক ভাবে এআইটিএ-র সঙ্গে কথা বলতে পারি। কিন্তু নির্দেশ দিতে পারি না।”
যা জেনে উৎফুল্ল এআইটিএ-র সিইও হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় বললেন, “কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, দল নির্বাচনের ব্যাপারে ওরা কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না। কোরিয়া ম্যাচের দল নির্বাচন চ্যাপ্টার ক্লোজড। দেশের হয়ে খেলতে অনিচ্ছুক ওই এগারো প্লেয়ারের মধ্যে যে বা যারা এর পর দেশের হয়ে খেলতে রাজি থাকবে, তাদের নাম পরের ডেভিস কাপ ম্যাচের দল নির্বাচনের সময় ভাবা হবে।” কিন্তু অলিম্পিকের সময়ও তো এআইটিএ প্রথমে শক্ত থেকেও পরে কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে নতুন করে দল বেছে দু’টো ডাবলস টিম পাঠিয়েছিল। “অলিম্পিকে আমাদের দুটো ডাবলস টিম পাঠাবার সুযোগ ছিল। তাই ব্যাপারটা ঘটেছিল। ডেভিস কাপে তো আর ভারতের দুটো দল নামানো সম্ভব নয়,” বললেন তিনি। |