পাকিস্তানকে নিয়েই যে মহিলাদের বিশ্বকাপ আয়োজনের ইচ্ছা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ষোলো আনা, ক্রিকেট বিশ্বকে তা বোঝানোর চেষ্টা শুরু করে হলেও পাকিস্তানের মহিলা দলকে আদৌ ভারতে আসার ছাড়পত্র দেবে কি না কেন্দ্রের বিদেশ মন্ত্রক, তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিল। ফলে ইচ্ছা থাকলেও কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই বোর্ডের। অবশ্য পথ খোলা রাখছে তারা। কলকাতা বা বেঙ্গালুরুর মতো নির্ঝঞ্ঝাট শহরে পাকিস্তানের ম্যাচ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে চাইছে বোর্ড।
সিএবি ও কর্নাটক রাজ্য সংস্থার কাছে প্রস্তাবও দিয়েছে বোর্ড। কিন্তু সেখানেও জটিলতা। রাজ্য সরকার ও শহরের পুলিশের সবুজ সঙ্কেতের প্রয়োজন। সরকার ও পুলিশের সম্মতি ছাড়া যে ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব নয়, তা এ দিন পরিষ্কার জানিয়ে দিল সিএবি। কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থাও সময় চেয়েছে। সব মিলিয়ে মহিলাদের ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরে টুর্নামেন্ট এক বা দু’সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেবে আইসিসি। এখানে বোর্ডের আর কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন ভারতীয় বোর্ড কর্তারা।
মহিলা বিশ্বকাপের আসর ভারত থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি উঠতেই বুধবার রাত থেকে নড়েচড়ে বসেন ভারতীয় বোর্ডের কর্তারা। টুর্নামেন্ট ভারতে রাখতে হলে যে পাকিস্তানকে ভারতে আনতেই হবে, তা বুঝে নিয়েই তাঁরা অন্যান্য শহরের খোঁজ শুরু করেন। কলকাতা ও বেঙ্গালুরুর কথাই প্রথমে মাথায় আসে তাঁদের। পাকিস্তানও কলকাতায় খেলতে রাজি বলে খবর। এ দিন বোর্ডের অন্যতম সহ সভাপতি রাজীব শুক্ল বলেন, “আমরা অন্যান্য রাজ্যর সঙ্গে কথা বলছি। আশা করি, একটা না একটা বিকল্প ভেনু পাওয়া যাবেই। পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে বিশ্বকাপ করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমরা চাইছি যাতে সহজে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।”
সম্প্রতি ভারত-পাক ম্যাচ নির্বিঘ্নে করায় এই দুই শহরকেই নিরাপদ ভেনু হিসেবে বেছেছে বোর্ড। বেঙ্গালুরুতে যদিও বা বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সভা হয়েছে, কলকতায় সে রকম কিছুই হয়নি। সিএবি-র কর্তাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে ফোনে কথা বলেছেন বোর্ড কর্তারা। বৃহস্পতিবার সিএবি-র কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলেন, “বোর্ড আমাদের জানিয়েছে ব্যাপারটা। কিন্তু আগের ম্যাচের সময় দেশের পরিস্থিতি যেমন ছিল, এখন মোটেই সে রকম নয়। তাই এখন আমাদের রাজ্য সরকার ও পুলিশের সম্মতি নিতে হবে। কিন্তু যতক্ষণ না কেন্দ্রীয় সরকার সম্মতি দিচ্ছে, ততক্ষণ তো রাজ্য সরকারের সঙ্গেও এই নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।” অর্থাৎ এখন বল কেন্দ্রের কোটের্। পাক মহিলা ক্রিকেটারদের ‘অ্যারাইভাল ভিসা’ দেওয়ার ওপর আপাতত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যত দিন না সীমান্তে পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়, তত দিন এই নিষেধাজ্ঞা ওঠার সম্ভাবনা কম। আপাতত টুর্নামেন্ট পিছিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি ঠান্ডা হওয়ার অপেক্ষায় থাকার পক্ষপাতী ভারতীয় বোর্ডের একাংশ। যখন পরিস্থিতি আবার ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন হয়তো পাকিস্তানের মহিলা ক্রিকেটারদের ভারতে আসার অনুমতি দেবে ভারত। কিন্তু সেই সময়টা কত দিনের, তা তো নির্দিষ্ট নয়। সুতরাং এ জন্য কত দিন অপেক্ষা করতে হবে বোর্ড ও আইসিসি-কে, সেটাই তো এখনও জানা নেই। আইসিসি অপেক্ষা করারই সিদ্ধান্ত নেবে, না সময় থাকতে থাকতে বিশ্বকাপের আসর অন্য দেশে নিয়ে চলে যাবে, সেটাই দেখার।
|
বাংলাদেশেও যেতে মানা আফ্রিদিদের
সংবাদসংস্থা • করাচি |
পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও খেলতে পারবেন না। সম্প্রতি বাংলাদেশ বোর্ড তাদের দলের পাকিস্তান সফর বাতিল করেছে বলেই এই সিদ্ধান্ত পাক বোর্ডের। তবে দেশের ক্রিকেটাররা এই নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তাঁদের দাবি, আন্তর্জাতিক তারকাদের খেলতে দেওয়া না হলেও যেন উঠতি ক্রিকেটারদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তা হলে তাঁরা কিছু উপার্জন করতে পারবেন। পাক বোর্ডের দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডের ক্রিকেটারদের সঙ্গেও বিশাল অঙ্কের চুক্তি রয়েছে বাংলাদেশ বোর্ডের। রশিদ লতিফসহ বেশ কিছু প্রাক্তন ক্রিকেটারও বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। তবে পাক বোর্ডের প্রধান জাকা আশরফ তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পাক বোর্ড আইপিএলের ধাঁচে যে টি টোয়েন্টি লিগ করতে চলেছে, সেই পাকিস্তান সুপার লিগে পাক ক্রিকেটারদের আর্থিক ক্ষতি পূরণ হয়ে যাবে। |