কোর্টের বাইরে ভালবাসা আর কোর্টের ভেতর সম্ভাব্য ঘৃণার আবহে অস্ট্রেলীয় ওপেনের চতুর্থ দিন। আর তার মধ্যেই ডাবলসে বড় অঘটনের শিকার লিয়েন্ডার পেজ। গতবারের চ্যাম্পিয়ন এবং এ বার দ্বিতীয় বাছাই পেজ-স্টেপানেক জুটি প্রথম রাউন্ডেই হেরে গেলেন। মেলবোর্ন পার্কের একেবারে অন্তিম কোর্টে (২২ নম্বর) লিয়েন্ডারদের স্ট্রেট সেটে ৬-৩, ৭-৫ হারান অবাছাই ইজরায়েল-দক্ষিণ আফ্রিকান জুটি জোনাথন এলিচ-কেভিন অ্যান্ডারসন। লিয়েন্ডারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম দৌড় অবশ্য এখনই শেষ হচ্ছে না। মিক্সড ডাবলসে তিনি ও রুশ কন্যা এলিনা ভেসনিনা-ও দ্বিতীয় বাছাই হয়েছেন। সেমিফাইনালে টিম লিয়েন্ডারের সঙ্গে পঞ্চম বাছাই মহেশ ভূপতি-নাদিয়া পেত্রোভার দেখা হতে পারে। অন্য সেমিফাইনালে তৃতীয় বাছাই সানিয়া মির্জা-বব ব্রায়ান বনাম অবাছাই রোহন বোপান্না-সুই উই হতে পারে, সব ভারতীয় টিঁকে থাকলে। |
রজার ফেডেরার ৬-৩, ৬-৪, ৬-৪ সার্কিটের পোড়খাওয়া রুশ নিকোলে ডাভিডেঙ্কোকে হারিয়ে তৃতীয় রাউন্ডে ওঠা মাত্র টেনিসমহলে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে ১৭ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীর পরবর্তী প্রতিপক্ষকে নিয়ে। তিনিসিঙ্গলসে ‘বেঁচে’ থাকা একমাত্র ঘরের ছেলে, জার্মানজাত অস্ট্রেলীয় বার্নার্ড টমিচ এই ম্যাচটা নিয়ে দিনকয়েক আগে আলটপকা মন্তব্য করে হাওয়া গরম করে দিয়েছেন। অস্ট্রেলীয় ওপেনে ফেডেরারের সামনে আপনার সম্ভাবনা কতটা প্রশ্নে তাঁর চেয়ে ১১ বছরের ছোট টমিচ ফোঁস করে উঠেছিলেন, “আরে, যদি ফেডেরার তৃতীয় রাউন্ডে ওঠে তবেই না...!” বিশ্বের ৪৩ নম্বর তরুণ এ দিন পাঁচ বারের অস্ট্রেলীয় ওপেন (শেষ বার ২০১০-এ) জয়ীর একেবারে বিপরীত ভঙ্গিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে কোনও ক্রমে (ড্যানিয়েল ব্র্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৬-৭, ৭-৫, ৭-৬, ৭-৬) জেতার পর অবশ্য বলেন, “পরের ম্যাচে আমাকে অনেক কিছু প্রমাণ করতে হবে।” বরং ফেডেরার বলছেন, “বার্নার্ডকে আবার ভাল খেলতে দেখে ভাল লাগছে। জকোভিচ-সহ এ বছর টানা দশটা ম্যাচ ও জিতেছে। ওর বিপক্ষে খেলার এটাই আসল সময়।” দ্বিতীয় রাউন্ডে তারকা ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অ্যান্ডি মারে, দেল পোত্রো, জো সঙ্গা, সেরেনা, আজারেঙ্কা জিতলেও টিনএজার ব্রিটিশ লরা রবসনের কাছে হেরেছেন প্রাক্তন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন কিভিতোভা। তবে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম তিন মেয়ের টেনিসের চেয়েও তাঁদের প্রেমকাহিনি নিয়েই যেন বেশি সরগরম টেনিসমহল।
জিমি কোনর্স-ক্রিস এভার্টের পর চল্লিশ বছরে এই প্রথম টেনিসে এত হাইপ্রোফাইল কোর্টশিপ-এর সন্ধান মিলছে। শারাপোভার বালগেরিয়ান টেনিস প্লেয়ার প্রেমিক দিমিত্রভ (প্রথম রাউন্ডে হারেন) অবশ্য ‘ব্যক্তিগত বিষয়’ নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নন। মাশা-ও সে কারণে চুপ। কিন্তু নিজের কোচ প্যাট্রিক মোরাতোগ্লোউ-এর সঙ্গে বিকিনি পরে ছবি তোলা নিয়ে সেরেনা উইলিয়ামস আদৌ বিব্রত নন। ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, “ধন্যবাদ আপনাদের। এই নিয়ে আমাকে অন্তত জিজ্ঞেস করায়।” আর স্তেফান জর্ডি-র সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আজারেঙ্কার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “আমরা সত্যিই খুব ঘনিষ্ঠ। ও আমার জীবনে ভীষণ স্পেশ্যাল। আমার জীবন এখন সত্যিই সুখের।’ দেখা যাক, তিন টেনিস-নায়িকার মধ্যে কার অস্ট্রেলীয় ওপেন পুরো সুখের যায়।
|