|
|
|
|
থমকে কাজ |
জলবিভাজিকা প্রকল্পের পরিদর্শনে এসে ক্ষুব্ধ সচিব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জলবিভাজিকা প্রকল্পের কোনও অগ্রগতি ঘটেনি জেলায়। প্রকল্পের কাজ দেখতে এসে এই নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কৃষি দফতরের প্রধান সচিব দিলীপ চট্টোপাধ্যায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১-১২ আর্থিক বছরেই ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প মঞ্জুর করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রকল্পে অর্থ দেওয়া হয়েছিল জেলাগুলিতেও। পশ্চিম মেদিনীপুর প্রথম ধাপে ১০ কোটি টাকা পেয়েছিল। কিন্তু ৪ মাস কেটে গেলেও একটি টাকাও খরচ করে পারেনি। কেন খরচ করা যায়নি? ভূমি সংরক্ষণ (কৃষি) দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর (প্রশাসন) সুকুমার কিস্কু বলেন, “এই প্রকল্পটি নতুন এসেছে। তার উপর প্রকল্পের কাজের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে কিছু লোক নিয়োগেরও প্রয়োজন। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই কিছুটা দেরি হয়ে যাচ্ছে। তবে দ্রুত গতিতে প্রকল্প রূপায়ণে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি রূপায়িত হলে একটি এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব। কিন্তু প্রথম ধাপের অর্থ খরচ করতে না পারলে দ্বিতীয় দফায় কেন্দ্রের কাছে টাকা চাইতে পারবে না রাজ্য। |
|
সাঁকরাইলে দিলীপ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র। |
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। গ্রামীণ এলাকায় কাজ শুরু না করা গেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জন্মাতে পারে। আবার দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হলে সরকারের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে সাধারণ মানুষের। সময়ে প্রকল্পের অর্থ খরচ না করতে পারলে কেন্দ্রীয় সরকারও পরের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দিতে দেরি করবে। ফলে প্রকল্পের গতি মন্থর হয়ে যাবে। এই কারণেই কৃষি দফতর চাইছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কাজটা অন্তত শুরু করে দিতে।
কাজে গতি আনার লক্ষ্যেই দফতরের প্রধান সচিব বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিলেন। সাঁকরাইল ব্লকের পাথরা ও খুদমরাই গ্রাম পঞ্চায়েত ঘুরে দেখেন তিনি। কৃষি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথাও বলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার মাওবাদী প্রভাবিত ব্লকগুলিতেই এই প্রকল্প রূপায়ণে জোর দিয়েছে প্রশাসন। জেলায় মোট ১৬টি প্রকল্প হওয়ার কথা। যার জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তার মধ্যে ১০ কোটি টাকা জেলা পেয়েও গিয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি? এখনও পর্যন্ত কেবল প্রকল্পের এলাকা চিহ্নিত হয়েছে। আর কোনও কাজই এগোয়নি। তা জানার পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত গতিতে কাজের নির্দেশ দেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬টি প্রকল্পের মধ্যে ২টি করবে খড়্গপুর ১ ও নয়াগ্রাম ব্লক প্রশাসন। ১টি প্রকল্প করবে বন বিভাগের রূপনারায়ণ বনবিভাগ। একটি করবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বাকি ১২টি করবে ভূমি সংরক্ষণ (কৃষি) দফতর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি প্রকল্পের জন্য ৪ জন করে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা হবে। এই প্রকল্পে একটি এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করার কথা। যেখানে সেচ, কৃষি, জীবিকা, ক্ষুদ্র শিল্প থেকে যাবতীয় বিষয় দেখা হয়। ওই কর্মীরা সেই বিষয়গুলিই খতিয়ে দেখবেন। তারপর কাজ করা হবে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মূল কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|