|
|
|
|
অরণ্যশহরে পর্যটন |
পুরনো প্রকল্প রূপায়ণে জোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা ঝাড়গ্রামের সুরম্য নিসর্গ বারবারই মন কেড়েছে পর্যটকদের। প্রকৃতির টানে পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্ত, এমনকী ভিন্ রাজ্য থেকেও এসেছেন পর্যটকেরা। ২০০৭ সালে ঝাড়গ্রাম মহকুমায় পর্যটনের উন্নয়নে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু মাওবাদী সমস্যার কারণে তা রূপায়িত করা যায়নি। ইতিমধ্যে রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। নতুন সরকার এ বার সেই সব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে উদ্যোগী হল। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমন ঘোষ বলেন, “হাতিবাড়ি এলাকার কাজ প্রায় শেষ। বাকি কাজও দ্রুত শেষ করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
এই পর্যটন উন্নয়ন পরিকল্পনার তিনটি স্তর রয়েছে।
১) ঝাড়গ্রাম শহর ও বনানী অতিথি নিবাসের উন্নয়ন
২) চিল্কিগড় ও কনকদুর্গা মন্দিরের উন্নয়ন
৩) কাঁকড়াঝোরের উন্নয়ন।
কাঁকড়াঝোর বরাবরই পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। উঁচু টিলা, চড়াই-উৎরাই পথ আর জঙ্গলপথে ঘেরা বেলপাহাড়ির এই এলাকা। অদূরে ঝাড়খণ্ড। আগে শীতকালে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসতেন পিকনিক করতে। শহর কলকাতার মানুষজনও সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে হাজির হতেন কাঁকড়াঝোরের বনবাংলোয়। সেই বনবাংলোই বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছিল মাওবাদীরা। আতঙ্কে পর্যটকেরা আর ও মুখো হননি। জঙ্গলমহলে অশান্তির জেরে বিগত বছরগুলিতে এলাকার উন্নয়নও হয়নি। অথচ ২০০৭ সালেই কাঁকড়াঝোরের উন্নয়নে ২ কোটি ৪৩ লক্ষ ২৮ হাজার বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। ইকো-ট্যুরিজম পার্ক তৈরি, কাঁকড়াঝোর থেকে ভুলাভেদা পর্যন্ত ট্রেকিংয়ের বব্যস্থা করা, গাডরাসিনি পাহাড় ও ঘাঘরা ঝর্না সংলগ্ন এলাকায় পর্যটকদের উপযোগী সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করতেই এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তবে তা আর খরচ হয়নি। কাজও এগোয়নি। কয়েকমাস আগেই বেলপাহাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কাঁকরাঝোরের উন্নয়ন প্রসঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময়ই মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত গতিতে কাজ শেষের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো পদক্ষেপ শুরু করেছে প্রশাসন।
অরণ্য শহর ঝাড়গ্রামকেও সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ওই সময়েই। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড সংস্কার, রবীন্দ্র পার্ককে ঢেলে সাজা, বনানী অতিথি নিবাসে পর্যটকদের থাকার সুবন্দোবস্ত করতে ১ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। জামবনির চিল্কিগড় ও কনকদুর্গা মন্দির সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছিল ৯৭ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। সেই সব কাজও দ্রুত শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়িতে গড়ে তোলা হচ্ছে ইকো ট্যুরিজম পার্ক। সংলগ্ন রত্নেশ্বর মন্দির সংস্কার, পর্যটকদের সেখানে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে কাজ হচ্ছে ১ কোটি ২৭ লক্ষ ৬ হাজার টাকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, বন দফতর এবং জেলা প্রশাসন ভাগাভাগি করে এই সব পরিকল্পনা রূপায়িত করবে। হাতিবাড়িতে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। অন্য ক্ষেত্রেও যাতে চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করা যায় সে জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|