আমজনতার পথে গেট বসিয়ে দিয়ে দখলদার আবাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
রীতিমতো ‘গেট’ লাগিয়ে সরকারি রাস্তা দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠল বিধাননগরের একটি সমবায় আবাসন সোসাইটির কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সমবায় আবাসনের একাধিক বাসিন্দা এই বেআইনি দখলের বিরুদ্ধে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থার (এডিডিএ) কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, এতে যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া রাস্তার যে অংশে পাঁচিল ও গেটের নির্মাণ কাজ করা হয়েছে তার নীচ দিয়ে আবাসনের ১৪টি বাড়ির নিকাশি, বিদ্যুৎ ও জলের পাইপ গিয়েছে। অবিলম্বে ওই নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। |
বন্ধ রাস্তা। ছবি: বিশ্বনাথ মশান। |
বিধাননগরে একটি ৩০ ফুট চওড়া রাস্তার দু’দিকের জমিতে সুভাষপল্লি সমবায় আবাসনের বাড়িগুলি গড়ে উঠেছে। আবাসনের বাসিন্দা মৌসুমী রায়, আপেল রানি গুহ এডিডিএ’র কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, সোসাইটির কয়েকজন কর্তা বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে রাস্তার দু’দিকে পাঁচিল দিয়ে গেট লাগিয়ে দিয়েছেন। ফলে আবাসনের ভিতরে যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া এই রাস্তাটিই আবাসনের অন্যদিক দিয়ে কেন্দ্রীয় নবোদয় বিদ্যালয় পর্যন্ত গিয়েছে। ফলে সাধারণ বাসিন্দারাও রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারছেন না। আবানের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা প্রতিবাদ করায় সোসাইটির ওই কর্তারা তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। মৌসুমীদেবী বলেন, “এই অনিয়মের পিছনে রয়েছেন সোসাইটির সেক্রেটারি মুক্তি দত্ত।” এডিডিএ’র কাছে দ্রুত ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলার আবেদন জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা। স্থানীয় বাসিন্দারাও জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ওই রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছেন। রাস্তাটি মেরামতি ও সারাইয়ের কাজ করে এডিডিএ। হঠাৎ এভাবে রাস্তাটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে গেট লাগিয়ে দেওয়ায় তাঁরা তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দা পঙ্কজ সরকার, রমেশ পোদ্দাররা বলেন, “রাস্তাটি সাধারণের বলেই আমরা জানি। কিন্তু হঠাৎ দেখছি, গেট বন্ধ।” তাঁরা জানান, আগে রিক্সা করে বা গাড়ি নিয়ে তাঁরা রাস্তাটি ধরে যেতেন। কিন্তু এখন আর তার কোনও উপায় নেই। বাধ্য হয়ে প্রায় এক কিমি ঘুরে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাসনের বাসিন্দাদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে ইতিমধ্যেই দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রাথমিক তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলেছেন। সোসাইটির সেক্রেটারিকে গত ১৪ নভেম্বর শুনানিতেও ডাকা হয়। কিন্তু তিনি আসেননি। এরপর ৩১ ডিসেম্বর ওই আবাসনের সোসাইটির সেক্রেটারিকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, রাস্তার উপরে বেআইনি নির্মাণ করেছেন তাঁরা এবং সাতদিনের মধ্যে সেই নির্মাণ নিজেদের খরচে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, যথারীতি গেট লাগানো। গাড়ি বা রিক্সা যাতায়াতের কোনও উপায় নেই। পথচারীরা কোনও রকমে গেট সামান্য খুলে যাওয়া আসা করছেন। বিষয়টি জানার জন্য সোসাইটির কার্যালয়ে যাওয়া হলেও সেক্রেটারি মুক্তিবাবুকে পাওয়া যায়নি।
এডিডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, অবৈধ নির্মাণ ভাঙার সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে বহু আগেই। এবার ‘ওয়েস্টবেঙ্গল টাউন অ্যান্ড কান্ট্রি প্ল্যানিং অ্যাক্ট’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে এডিডিএ। সে কথা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সোসাইটির সেক্রেটারিকে।
|