আট কোটি টাকার মাটি কাটায় দুর্নীতি, বদলি আধিকারিককে
দী খাত সংস্কার বাবদ প্রায় ৮ কোটি টাকার মাটি কাটায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সংশ্লিষ্ট এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র মৃগাঙ্ক সরকারকে বদলি করে দিলেন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এসজেডিএ সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে ওই বদলির সিদ্ধান্ত হয়। তাঁকে জলপাইগুড়ি শাখায় বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসজেডিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার গোদালা কিরণকুমার। অভিযোগ, ঠিকাদারদের সঙ্গে ইঞ্জিনিয়রদের যোগসাজশে স্রেফ ই-কোটেশনের ভিত্তিতে প্রথমে ১০ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে সেই প্রকল্প বাবদ প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দুটি ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের কাজ করানো হয়েছে কেন তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। মৃগাঙ্কবাবুর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
এমতাবস্থায়, এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ তাঁকে বদলি করে ‘মুখরক্ষা’র উপায় খুঁজছে বলেও বামেদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেছেন, “মাটি কাটার কাজ নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা অত্যন্ত গুরুতর। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে কথা হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি গড়া হচ্ছে। তারা সব খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানান, আপাতত মৃগাঙ্কবাবুকে জলপাইগুড়িতে বদলি করা হয়েছে। ঠিকাদার-ইঞ্জিনিয়র যোগসাজশের অভিযোগ ওঠার জেরেই ওই বদলি কি না সেই প্রশ্নে এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান বলেন, “বদলি যে কোনও সময় হতে পারে। এর বেশি বলার নেই।”
এসজেডিএ সূত্রের খবর, এত বড় অঙ্কের কাজের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার হওয়াটা বাধ্যতামূলক। অথচ তা হয়নি। উপরন্তু, ই-কোটেশন পদ্ধতিতে কাজ দেওয়া হয়েছে। নদী খাত থেকে ৭৭ হাজার ঘন মিটার মাটি কাটা হয়েছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু ওই বিপুল পরিমাণ মাটি কোথায় ফেলা হয়েছে তা এসজেডিএ-এর কাছেও স্পষ্ট নয়। যে পরিমাণ মাটি কাটার কথা বলে ঠিকাদার সংস্থাকে টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই পরিমাণ মাটি আদৌ কাটা হয়েছে কি না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। তা ছাড়া মাটি কাটার যে দর ঠিক হয়েছে তা অনেকটাই বেশি বলে নজরে এসেছে এসজেডিএ-এর। মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই সব কাজ করেছি ও করব। এ ব্যাপারে আর কিছু বলব না। এটুকু বলতে পারি, আমি এখন পর্যন্ত বদলির কোনও নির্দেশ পাইনি।
যে সংস্থা দুটিকে দিয়ে জোড়াপানি নদী খাত সংস্কারের কাজ করানো হয় তার একটির কর্ণধার বুড়া পাল অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, “ই-কোটেশন এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া একই ব্যাপার। নিয়ম মেনে মাটি কাটা হয়েছে। সব হিসেব রয়েছে। ইঞ্জিনিয়র-টিকাদার যোগসাজশের অভিযোগ ভিত্তিহীন।” ওই কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে অপর এক ঠিকাদার শঙ্কর পালের নামও। তিনি বুড়াবাবুর আত্মীয় হন। শঙ্করবাবু বলেন, “জোড়াপানি নদীর মাটি কাটার কাজে আমি কোনও ভাবেই যুক্ত নই। বুড়াবাবুর কাজে সাহায্যের জন্য মাঝে মধ্যে দেখতে গিয়েছি।”
এসজেডিএ-এর একাধিক সদস্য অবশ্য মনে করেন, জোড়াপানি নদীর মাটি কাটার কাজে দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব নিরেপক্ষ কোনও সংস্থাকে দেওয়া দরকার। সেই সঙ্গে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তির রয়েছে, তাঁদের আয়ের সঙ্গে সম্পদের সঙ্গতি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে উপযুক্ত সংস্থার সাহায্য নেওয়ার দাবি তুলেছেন এসজেডিএ-এর সদস্যদের অনেকেই। সংস্থার চেয়ারম্যান জানান, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে পরের পদক্ষেপ করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.