পঞ্চায়েতের আগে রাজ্যকে হুঁশিয়ারি মুসলিম সংগঠনের
ঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন দাবি পেশ এবং সমালোচনা করে রাজ্য সরকারকে বার্তা দিল কয়েকটি মুসলিম সংগঠন। শনিবার শহিদ মিনার ময়দানে সভা করে তারা অভিযোগ করে, ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল মুসলিমদের উন্নয়নে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার বেশির ভাগই এখনও পূরণ হয়নি। সরকারের বিরুদ্ধে মুসলিমদের ‘প্রতারণা’র অভিযোগও তোলা হয় ওই সভা থেকে। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, এ রকমই চললে ভোটেই জবাব দেওয়া হবে। এ দিন স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয় ওই সভায়।
ওই সভা থেকে মুসলিমদের জন্য শিক্ষা, চাকরি, আবাসন এবং জনপ্রতিনিধি নির্বাচন-সহ সব ক্ষেত্রে ২৭% সংরক্ষণ দাবি করা হয়। সংগঠনগুলির আরও দাবি, ইমাম এবং মোয়াজ্জিনদের কেবল ভাতা দেওয়াই যথেষ্ট নয়। রাজ্যের মসজিদগুলিকে কেন্দ্র করে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বা মক্তব গড়ে তোলা দরকার। সেখানে ইমামরা যাতে অঙ্ক এবং ইংরেজি শেখানোর পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে তার বিনিময়ে সরকারের থেকে বেতন নিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হোক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ‘মাদ্রাসা’ শব্দটি যুক্ত করা হয়নি বলেও অভিযোগ করে সংগঠনগুলি। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই কেন, সে প্রশ্নও তোলে তারা।
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভ সংখ্যালঘুদের। —নিজস্ব চিত্র
কবি কাজি নজরুল ইসলামের জন্মস্থান চুরুলিয়ায় তাঁর নামে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে আসানসোলে। একেও বঞ্চনা বলে মনে করছে ওই সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, ওই বিশ্ববিদ্যালয় চুরুলিয়াতেই করতে হবে। মহম্মদ কামরুজ্জামানের কথায়, “সংখ্যালঘুদের সমর্থন না পেলে ওঁরা ক্ষমতায় আসতেন না। এসেই বদলে গেলেন!” রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের উপদেষ্টা সাংসদ সুলতান আহমেদের অবশ্য বক্তব্য, “একটি সম্প্রদায়ের ভোটে সরকার হয় না। বাংলার মানুষ ভোট দিয়ে এই সরকারকে এনেছেন। তার মধ্যে সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, তফশিলি জাতি-উপজাতি সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন। তাঁদের মধ্যে বিভাজন করা ঠিক নয়।”
সংরক্ষণের জন্য ওবিসি শংসাপত্র পেতে মুসলিমদের প্রশাসনিক হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলেও কামরুজ্জামানের অভিযোগ। তিনি বলেন, “সরকার সংরক্ষণ নিয়ে স্পষ্ট নীতি ঘোষণা করেনি।” মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি সারা বাংলা সংখ্যালঘু কাউন্সিলের সভাপতি মৌলানা মহম্মদ মোমিনের কটাক্ষ, “শুধু ইন্শা-আল্লাহ্, মাশা-আল্লাহ্ দিয়ে হবে না। সংরক্ষণ-রোজগার দিতে হবে।”
ওই সংগঠনগুলির প্রতিক্রিয়া জেনে সুলতান আশ্বাস দেন, “আমরা ওঁদের স্মারকলিপি পেয়েছি। দাবিগুলি দেখব। প্রয়োজনে ওঁদের সঙ্গে কথাও বলব।” তবে সরকার ইতিমধেই মুসলিমদের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে বলেও সুলতান জানান। আর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, “ওঁরা তো মমতার পাশে ছিলেন। এখন প্রতারিত বোধ করছেন।” সংগঠনগুলির দাবি সম্পর্কে সেলিম বলেন, “সংরক্ষণ বিষয়ে রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের সুপারিশই বাম সরকার মেনেছিল। আর নমাজ পড়িয়ে ভাতা পাওয়ার চেয়ে শিক্ষকতা করে বেতন চাওয়া ভাল।”
বিজেপি অবশ্য আগাগোড়াই সংখ্যালঘু সংরক্ষণ এবং ইমাম ও মোয়াজ্জিন-ভাতার বিরোধী। তাদের বক্তব্য, ধর্মের ভিত্তিতে নয়, আর্থিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে সংরক্ষণ হওয়া উচিত। আর কোনও ধর্মের গুরুকেই সরকারের ভাতা দেওয়া উচিত নয়। রাহুলের কথায়, “ওই দাবিগুলি তো তৃণমূলই শিখিয়েছে। এখন মানতে পারছে না বলে মুসলিমরা অসন্তুষ্ট হচ্ছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.