ট্রেভর জেমস মর্গ্যান কি আই লিগের স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দিলেন?
এখনও দশটা ম্যাচ বাকি। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ যে শনিবার ক্লাব তাঁবুতে দাঁড়িয়েই সাফ জানিয়ে দিলেন, “এখান থেকে আই লিগ পাওয়া খুব কঠিন। লিগের যা অবস্থা, তাতে জিততে হলে এখন অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। দেখতে হবে ডেম্পো, চার্চিল কী করে?” মর্গ্যানের ভবিষ্যদ্বাণী পুরোপুরি ভুল নয়। তবে এত তাড়াতাড়ি হাল ছেড়ে দেওয়া কি ঠিক হচ্ছে?
অম্বেডকরে ভরাডুবির পরে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ইস্টবেঙ্গল। দলের অন্দরে যন্ত্রণা বাড়ছে। অসন্তুষ্টির মাত্রাও। যে দলের কোচ সাধারণত অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলে আসার পরে এক দিনের ছুটি ঘোষণা করে দেন, সেই মর্গ্যান দিল্লি থেকে ফিরে টানা অনুশীলন করিয়ে যাচ্ছেন। ক্রমশ আই লিগ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জেরে মর্গ্যান যে ভিতরে ভিতরে কতটা চাপে, সেটা বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হল না। লাল-হলুদ কোচ বলছিলেন, “অম্বেডকরে আমরা খারাপ খেলে হেরেছি, তা কিন্তু নয়। বিরতির আগেই আমাদের তিন গোলে এগিয়ে থাকা উচিত ছিল। হয়নি। আমরা সবাই হতাশ।” |
চিডি কি মুছতে পারবেন মর্গ্যানের হতাশা? শনিবার ইস্টবেঙ্গল প্র্যাক্টিসের ছবি শঙ্কর নাগ দাসের। |
শনিবার সাতসকালে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, হতাশার ছাপ স্পষ্ট ভেসে উঠছে ফুটবলারদের বডি ল্যাঙ্গোয়েজেও। সেই ফুরফুরে, চনমনে আবহাওয়াটাই যেন উধাও! আর কলকাতা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে কল্যাণীর এক হোটেলে বসে সেই মনোবল ভেঙে যাওয়া দলকে আটকানোর ছক কষছেন মুম্বই এফসি কোচ খালিদ জামিল। বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গলকে প্রথম পর্বেও হারিয়েছি। আশা করছি, এ বারও তিন পয়েন্ট নিয়েই ফিরব।” জামিলের কথাতেই পরিষ্কার, ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে আক্রমণাত্মক ছক সাজাচ্ছেন তিনি। এবং ইয়াকুবু-অভিষেক যাদবদের ঠেকাতে মর্গ্যানের ডিফেন্সকেও কিন্তু তৈরি থাকতে হবে।
ইস্টবেঙ্গলের সমস্যা হল, গোলের জন্য হাঁ করে বসে থাকতে হচ্ছে শুধু চিডির দিকে তাকিয়ে। কখনও-সখনও রবিন সিংহ একটা গোল করছেন, কিন্তু দশটা মিসের পরে। আর মননদীপ সিংহ? তাঁর পারফরম্যান্সের গ্রাফ এতটাই নিম্নমুখী যে অগত্যা রবিনকে দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। স্বদেশি ফরোয়ার্ডদের বদান্যতা একা হাতে সামলাতে হচ্ছে চিডিকেই। কিন্তু কত দিন? পঁয়ষট্টি-সত্তর মিনিট কাটতে না কাটতেই এখন দমে টান পড়ছে চিডির। ঘনিষ্ঠ মহলে নাইজিরিয়ান গোলমেশিন এ-ও জানিয়েছেন, একা আর চাপ নিতে পারছেন না। এখন দেখার, বরিসিচ চলে আসায় এরপর কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারেন কি না চিডি।
মাঝমাঠের বৈচিত্র ইস্টবেঙ্গলের সম্পদ। ইদানীং সেই শক্ত ঘাঁটিতেও চিড় ধরতে শুরু করে দিয়েছে। মিডফিল্ডারদের পারফরম্যান্সে এতটাই অসন্তুষ্ট মর্গ্যান যে, ওএনজিসি ম্যাচে হারের জন্য সরাসরি তাঁদেরই দায়ী করলেন লাল-হলুদ কোচ। বললেন, “শেষ দশ মিনিট ৩-৪-৩ ছকে খেলেছি বলে অনেক সমালোচনা হচ্ছে আমার। ওই ম্যাচে মাঝমাঠের এক জন ফুটবলার ভুল না করলে হয়তো এক পয়েন্ট নিশ্চিত করে ফিরতে পারতাম।” কে সেই ফুটবলার? নামটা গোপনই রাখলেন মর্গ্যান। উল্লেখ্য, মুখে কিছু না বললেও শনিবার কল্যাণীতে একটাই পরিবর্তন হচ্ছে দলে। ইসফাক আমেদের জায়গায় দলে ঢুকছেন কেভিন লোবো। |