জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব ধরে রাখার লড়াইটা সব সময় খুব কঠিন হয়। আর অস্ট্রেলীয় ওপেনের যা ড্র দেখছি, তাতে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কার জন্য এই চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন হতে চলেছে। সার্কিটে কমবয়সি মেয়েদের প্রায় প্রত্যেকেই হার্ড কোর্টে খুব ভাল খেলে। তাই ওদের কাউকেই আলাদা করে এগিয়ে রাখতে পারছি না। তবে টুর্নামেন্টে কে ফেভারিট তা নিয়ে বোধহয় কারও মনেই কোনও সংশয় নেই।
গত বছর উইম্বলডন জেতার পর থেকে সেরেনা উইলিয়ামসকে স্রেফ থামানো যাচ্ছে না! |
জকোভিচ-সেরেনা। মেলবোর্ন পার্কে। শনিবার। ছবি: এপি |
নিজের সার্ভিসকে সেরেনা প্রায় একটা মারণাস্ত্র করে তুলেছে। বিশেষ করে ওর সেকেন্ড সার্ভে আজকাল এত গতি আর শক্তি থাকে, যে সেটা সামলাতে গিয়ে যে কোনও প্রতিপক্ষ নাজেহাল হচ্ছে। তা সে যতই পাওয়ার টেনিস খেলুক। এর সঙ্গে যোগ করুন সেরেনার ক্ষুরধার ফোরহান্ড আর বল রিট্রিভ করার ক্ষমতা। একত্রিশ বছর বয়সেও সেরেনার মধ্যে মন্থর হয়ে পড়ার এতটুকু চিহ্ন নেই। সব মিলিয়ে এত কমপ্লিট প্লেয়ার যে ওকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে বেছে নেওয়া যাচ্ছে না। মারিয়া শারাপোভা আমার ফেভারিটের তালিকায় দু’নম্বরে । তবে সত্যি বলতে কী, এই গ্র্যান্ড স্ল্যামটা সেরেনা নিজে থেকে না হারলে ওকে হারানো অসম্ভব।
চোটের কারণে ব্রিসবেনের টুর্নামেন্টটা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল মারিয়া। অস্ট্রেলীয় ওপেনে চোটটা ওকে ভোগাবে কি না, সেটা দেখার বিষয়। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, মারিয়ার চোট তেমন গুরুতর কিছু নয়। গ্র্যান্ড স্ল্যামের আগে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতেই ও ব্রিসবেনে নামেনি। পাশাপাশি, ভিক্টোরিয়ার টেনিস দক্ষতাকে ছোট করতে চাইছি না। ভিক্টোরিয়াও কমপ্লিট প্লেয়ার। অসম্ভব পরিশ্রমী। তবু দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সেরেনার সামনে ও ইদানীং যত বার পড়েছে, তত বারই হেরেছে।
সাম্প্রতিক কালে মেয়েদের টেনিসে এমন পরিষ্কার ফেভারিট বলে আর কাউকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে আমার তো মনে পড়ছে না। কয়েক বছর আগেও আমরা অভিযোগ করতাম যে কোনও প্লেয়ার সার্কিটে টানা সপ্তাহ দুই ভাল খেললেই টুর্নামেন্ট জেতার জায়গায় চলে যাচ্ছে। সেরেনা কিন্তু একা হাতে, বা বলা ভাল ওর ফোরহ্যান্ডের শক্তি ফলিয়ে সেটা বদলে দিয়েছে। আমার বিশ্বাস এতে মেয়েদের টেনিসই উপকৃত হয়েছে। এখন খালি সেরেনার টক্করের এক জন প্রতিপক্ষ চাই। যার সঙ্গে ওর কোর্টের শত্রুতাটা জমবে! |