অর্থসঙ্কট মোকাবিলায় ওয়েভার স্কিমের পরে এ বার কলকাতা পুরসভার দাওয়াই ‘মিউটেশন স্কিম’। যার মূল লক্ষ্য, দীর্ঘকাল ধরে শহরের যে সব জমি-বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মিউটেশনের কাজ আটকে রয়েছে, দ্রুত সেই কাজ সেরে ওই সব জমি-বাড়িকে পুর-সম্পত্তিকরের আওতায় আনা। সম্পত্তিকর বাবদ এ থেকে পুরসভার আয় হতে পারে একশো থেকে দেড়শো কোটি টাকা। এ বিষয়ে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অর্থসঙ্কট মোকাবিলায় এ বছরের গোড়া থেকেই ওই কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।”
পুর-কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, শহরের প্রায় ২০ শতাংশ জমি-বাড়ি এবং ফ্ল্যাটের মিউটেশন এখনও হয়নি। দীর্ঘকাল ধরে মিউটেশন না হওয়ায় ওই সব জমি-বাড়ির সম্পত্তিকর মূল্যায়নের কাজও আটকে আছে। সেগুলি এখনও পুর-করদাতাদের তালিকার বাইরে। ফলে সম্পত্তিকর আদায়ের সুযোগও নেই। তাই আয়ের উত্স সন্ধানে নতুন বছরের গোড়া থেকেই আটকে থাকা মিউটেশনের কাজ শুরু করতে চান পুর-কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শহরের প্রায় ২০ শতাংশ জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটের মিউটেশনের কাজ আটকে থাকল কেন? পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে অবশ্য কোনও সন্তোষজনক জবাব মেলেনি। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া হয়, সংশ্লিষ্ট জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটের মালিকপক্ষ উদ্যোগী না হওয়ায় আটকে রয়েছে ওই কাজ, তবু নিজেদের ব্যর্থতা এড়াতে পারছেন না পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরসভার মিউটেশন এবং অ্যাসেসমেন্ট দফতর সূত্রের খবর, কোনও জমি-বাড়ির মালিকপক্ষ মিউটেশনে উদ্যোগী না হলেও আইনত পুরসভা ওই কাজে তত্পর হতেই পারে। কারণ মিউটেশন না হলে সম্পত্তিকর আদায়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পুরসভাই।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওয়েভার স্কিমে কমপক্ষে ৬০০ কোটি টাকা আদায় হবে বলে আশা করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আদায় লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। আদায় হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ওই অভিজ্ঞতা থেকে ‘মিউটেশন স্কিম’ নিয়েও খুব একটা সাফল্যের আশা করছেন না পুর-অ্যাসেসমেন্ট দফতরের কর্মীরা।
পুরকর্তারা জানান, শহরের ১৪১টি ওয়ার্ডে এই মুহূর্তে সম্পত্তিকর দেন প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ মানুষ। দীর্ঘকাল ধরে মিউটেশন আটকে থাকার ঘটনা সংযোজিত এলাকাতেই অপেক্ষাকৃত বেশি। মেয়র জানান, জমি-বাড়ির আটকে থাকা মিউটেশনের কাজ দ্রুত শেষ করার পরিকল্পনা হয়েছে। মিউটেশনের কাজ সারতে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আবেদন জনানো হবে। |