বাংলাদেশের রফতানিকারীদের সঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গোলমাল বেঁধেছে। তার জেরে শনিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ভারতের পেট্রাপোল এবং বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের সীমান্ত-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেল। এর ফলে, ভারতকে হারাতে হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা।
পেট্রাপোল শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রফতানির জন্য শনিবার বন্দরে প্রায় ৩৭৫টি পণ্যভর্তি ট্রাক দাঁড়িয়ে পড়েছে। ওই দফতরের সহকারী কমিশনার শুভেন দাশগুপ্ত বলেন, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য পণ্য রফতানি বন্ধ রয়েছে। এক দিন রফতানি বন্ধ হলে ভারতকে ৭০ থেকে ১০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা হারাতে হয়। আমরা চাই দ্রুত জট কাটুক।” |
পেট্রাপোলের সামনে দাঁড়িয়ে পণ্যবাহী ট্রাক। পার্থসারথি নন্দীর তোলা ছবি।
|
বেনাপোলে সে দেশের রফতানিকারীদের কাজকর্ম দেখভাল করে ‘বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’। ওই সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ জানুয়ারি ভারতে মাছ রফতানির সময়ে একটি ট্রাক আটকে দেয় বিজিবি (বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ)। ট্রাকের চালক-খালাসিকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
এর পরে ট্রাকটিকে বিজিবি বেনাপোলে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তা নিয়ে আরও জলঘোলা হয়। এর পরই ওই সংগঠন-সহ রফতানিকারীদের পাঁচটি সংগঠন বিজিবি-র ‘হয়রানি’র প্রতিবাদে ১২ জানুয়ারি থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি ও পণ্য খালাস বন্ধ রেখে লাগাতার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয়। ‘বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক আল হাজ্ব মহম্মদ মহসিন মিলন বলেন, “বিজিবি-র হয়রানির কারণে পণ্য আমদানি-রফতানি কমে যাচ্ছে। রফতানিকারীরা ভীত-সন্ত্রস্ত। তাই এই বন্দর দিয়ে ভারতে রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।” বেনাপোলে রফতানিকারীরা যে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা তাঁদের আগে জানানো হয়নি দাবি করে ‘পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “ধর্মঘট বেশি দিন চললে পরিস্থিতি জটিল হবে।”
অবশ্য, দু’দেশের শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, রবিবার বেনাপোলে সে দেশের রফতানিকারী, বিজিবি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকে জট কাটবে, আশা করছে দু’পক্ষই। |