ক্ষীরোদ দাস ও মুকুন্দ দাস শুধু প্রতিবেশী ছিলেন না। দু’জনে এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে এলাকায় ‘মামা-ভাগ্নে’ বলে পরিচিত ছিলেন তাঁরা। ভদ্র ও নিরীহ স্বভাবের সেই মামা-ভাগ্নেকে খুনের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাড়ছে ক্ষোভও। শুক্রবার দুপুরের ওই ঘটনার পরে গ্রামে শোকের ছায়া। কিন্তু, পুলিশ সুপারকে সামনে পেয়ে সেই শোকার্ত মানুষই ক্ষোভে-দুঃখে ‘এসপি গো ব্যাক’ বলে ঘনঘন স্লোগান দিলেন। অবিবাহিত মুকুন্দবাবুর বাবা, মা ও এক ভাই রয়েছে। ছেলের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েছেন বাবা শীতলবাবু। তিনি পেশায় দিনমজুর। তিনি বলেন, “কিছুদিন ধরে রায়গঞ্জে পর পর খুনের ঘটনা ঘটছে। মুকুন্দের কিছু হয়ে যাবে আশঙ্কা করে ওকে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে বলেছিলাম। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় আমার আশঙ্কাই সত্যিই হল।” বাড়ির পাশেই ক্ষীরোদবাবুর মুদির দোকান রয়েছে। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে সুরঞ্জিত দাস বলেন, “আমার বাবা সব সময় মানুষের উপকারে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। বাবা খুন হতে পারেন তা বিশ্বাসই হচ্ছে না। খুনিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছি।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য এদিন কলকাতা থেকে ফোনে জানান, মুখ্যমন্ত্রী জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষকে শক্ত হাতে আইনশৃঙ্খলা মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা তৃণমূল নেতা সুনীল ভৌমিক জানান, তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজে সন্তুষ্ট হয়ে ৬ জানুয়ারি রায়গঞ্জের ইনস্টিটিউট হলে রাজ্য কৃষি দফতরের প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে মুকুন্দবাবুকে কিসান খেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের রায়গঞ্জ ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ক্ষীরোদবাবু প্রায় দেড় বছর ধরে রায়গঞ্জ ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। মুকুন্দবাবু ক্ষিরোদবাবুকে মামা বলে ডাকতেন। মাড়াইকুড়া পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য আলতাব হোসেন বলেন, “ওই দু’জনেই অত্যন্ত নিরীহ ও ভদ্র স্বভাবের মানুষ ছিলেন। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় শহরের পাশাপাশি এবারে পঞ্চায়েত এলাকারও আইনশৃঙ্খলাও ভেঙে পড়ল।” |