|
|
|
|
ফড়ে-দৌরাত্ম্য ঠেকাতে ধান কেনার সরকরি শিবির |
চেক ফেরায় ক্ষুব্ধ চাষিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ধূপগুড়ি |
শিবিরে ধান বিক্রি করে চেক বাউন্স হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের প্রায় ২৫ জন এবং সদর ব্লকের শিকারপুর এলাকার এ পর্যন্ত আট জন কৃষক সরকারি ব্যবস্থাপনায় ধান বিক্রি করে চেক পাওয়ার পরে ব্যাঙ্কে টাকা ভাঙাতে গেলে টাকা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। ওই কৃষকরা দফতরে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ফড়ে দৌরাত্ম্য ঠেকাতে কৃষকদের হাতে ধানের ন্যায্য মূল্য পাইয়ে দেওয়ার লক্ষে গত গত বছর ১৫ অক্টোবর খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়িতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ধান কেনার সুচনা করে যান কুইন্টাল প্রতি ১২৫০ টাকা দাম দেওয়া হবে বলে সরকার জানিয়ে দেয়। সারা রাজ্যে ২২ লক্ষ ৩৪ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যে ক্যাম্প শুরু হয়। জলপাইগুড়ি জেলার ২৯টি মিল মালিক এবং ইসিএসসি-র মাধ্যমে ডিসেম্বর থেকে ধান কিনতে শুরু করে সরকার। তবে মন্ত্রী যে ধূপগুড়ি থেকে ধান কেনার সুচনা করেন সেখানকার বহু চাষি ধান বিক্রির পর ব্যাঙ্ক থেকে টাকা না পেয়ে বিপাকে। ধূপগুড়িতে চারটি ধান কেনার শিবির হয়েছে সুপার মার্কেট, ডাউকিমারি, সোনাতলাহাট ও নাথুয়ার ৬০০ কৃষকের ৬ হাজার কুইন্টাল ধান কেনে মিল মালিক ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম। শিকারপুরের ৮ জন কৃষকের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে বলে খাদ্য দফতরে খবর এসেছে। সিপিএম পরিচালিত গদেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ধ্বজেন রায় জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর ডাউকিমারিতে ২০০ জন কৃষক শিবিরে ধান বিক্রি করেন। ১৪ জন কৃষক টাকা না পেয়ে ব্যাঙ্ক থেকে ফিরেছেন। ধূপগুড়ি বারোঘড়িয়া ও মাগুরমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু চাষি টাকা না পেয়ে প্রধানের দ্বারস্থ হয়েছেন। প্রতি ক্ষেত্রে ১০০ টাকা ব্যাঙ্ক কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ। বারোঘরিয়ার এবং গদেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সবিন রায় ও ধ্বজেন রায় বলেন, “কৃষকরা প্রতিদিন বাড়িতে ও দফতরে এসে কী করে টাকা পাবেন তা নিয়ে ঘুরছেন। বিষয়টি আমাদের হাতে নেই সেটা বোঝাচ্ছি। কী ভাবে তারা টাকা পাবেন তা ব্লক স্থরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি।” তবে সারা ব্লকে কত জন কৃষকের চেক বাউন্স হয়েছে তার নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে পারেননি ধূপগুড়ির ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার সৌমেন্দ্র দূতরাজ। তাঁর কথায়,“কয়েক জনের চেক বাউন্স হয়েছে। খাদ্য আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।” গত ২০ ডিসেম্বর ডাউকিমারি শিবিরে ১১ মন ধান দিয়ে দক্ষিণ কাঠুলিয়ার গ্রামের বাসিন্দা অনাথ সরকার ৫৪০০ টাকার চেক পান ব্যাঙ্কে চেক ভাঙাতে যান। চেক বাউন্স হওয়ার কারণে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ১০০ টাকা কেটে নেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা অনিতা সরকারের একই অবস্থা। পাঁচ বিঘা জমির উৎপাদিত ২৫ মন চাল তিনি শিবিরে দিয়ে ১২৫০০ টাকার চেক পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, “২৫ জনের চেক বাউন্স হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। খাদ্য সরবরাহ দফতর যাতে দ্রুত চেক গুলির টাকা মিটিয়ে দেয় তা জানানো হয়েছে।” জলপাইগুড়ির খাদ্য সরবরাহ আধিকারিক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, “সকলেই টাকা পাচ্ছেন। সামান্য ত্রুটির কারণে দুটি মিল মালিকের কয়েকটি চেকের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে বলে জেনেছি। ওই গোলমাল শীঘ্রই দূর করা হবে। চাষি টাকা পাবেন, দুশ্চিন্তার কারণ নেই।” |
|
|
|
|
|