শুধু পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে মহিলাদের সম্ভ্রম রক্ষা পর্যন্ত সব কিছুতেই পাড়ার ক্লাবগুলিকে নজর রাখার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার ক্লাবগুলির উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা নজর রাখবেন, কোনও খারাপ কাজে কেউ যেন উৎসাহ না-পায়। আপনারা নজর রাখবেন, আমাদের বোনেদের সম্মান যেন অক্ষুণ্ণ থাকে। কেউ যেন চুরি-ডাকাতির দিকে না-যায়। কেউ যেন খারাপ হয়ে না-যায়। এমনকী চক্রান্ত করে কেউ যাতে বাংলার বদনাম করতে না-পারে, সে-দিকেও নজর রাখবেন আপনারা।”
মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলিকে এই দায়িত্ব দিতে চাইছেন কেন?
মমতা বলেন, “রাজ্যে ১০ কোটি লোক আর পুলিশ মাত্র ৩০ হাজার। পুলিশ সবার বাড়ি গিয়ে নিরাপত্তা দিতে পারে না। ক্লাবগুলো পারে।”
মমতার সরকারের দেড় বছরের শাসনকালে আইনশৃঙ্খলা ও নারী-নিগ্রহের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। পথে নামছে বিরোধী দল, সাধারণ মানুষও। তিনি পুলিশমন্ত্রীও। তাই সরাসরি তাঁর দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী ‘চক্রান্ত’-এর কথা বলছেন। কিন্তু ক্লাবগুলিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নজরদারের ভূমিকা নিতে আহ্বান জানানোর পিছনে তাঁর উদ্বেগই কাজ করছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রেও ক্লাবগুলির শরণাপন্ন হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ক্রীড়া দফতরের এক অনুষ্ঠানে ক্লাবগুলির উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারাও স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করতে পারবেন। আমরা ৩০% আর্থিক সাহায্য করব।” ক্লাবগুলিকে নিয়ে তথ্য ব্যাঙ্ক গড়ার পরিকল্পনাও আছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই ব্যাঙ্কে খেলোয়াড় ও ক্লাবগুলির তথ্য থাকবে। ওই তথ্যভাণ্ডারের রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গড়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
ভাঁড়ার তলানিতে ঠেকলেও ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়া যে থেমে থাকবে না, তা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, গত বছর যে-সব ক্লাব টাকা পেয়েছিল, তারা চার বছর এক লক্ষ টাকা করে পাবে। এ বার যারা প্রথম টাকা পেল, তারা আরও চার বছর তা পাবে। ১৬১৪টি ক্লাবকে দু’লক্ষ করে টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে তিনি জানান, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মুর্শিদাবাদে আরও ক্লাবকে অনুদান দেওয়া হবে। সংখ্যাটা ১৭৫০ ছাড়িয়ে যাবে। উত্তরবঙ্গের ক্লাবগুলিকে বিশেষ সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এ দিন মহাকরণে জানান, উত্তরবঙ্গ উৎসব উপলক্ষে ১০০টি ক্লাবকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। |