ভাড়া বাড়াতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ
বিচারকের নির্দেশে ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনায় ঘাটমালিক
গে নদী পারাপারের ভাড়া ছিল ৫০ পয়সা। হাইকোর্টের নির্দেশে সেটি বেড়ে এক ধাক্কায় হয়েছে ৪ টাকা। আর এই ভাড়াবৃদ্ধি নিয়েই ক্ষোভে দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। ক্ষুব্ধ ঘাটের বর্তমান মালিকও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের দুর্বাচটি পঞ্চায়েতে গোবদিয়া নদী পারাপার নিয়েই দেখা দিয়েছে এই সমস্যা।
গোবদিয়া নদীর একদিকে রয়েছে চিন্তামণি পুরঘাট। অন্যদিকে হরেন্দ্রনগর ঘাট। বহু বছর ধরেই দু’টি ঘাট দিয়ে পারাপার চলছে। ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পারাপার করেন। আগে জেলা পরিষদের দায়িত্বে থাকা এই দু’টি ঘাটের মধ্যে নৌকা পারাপারের ভাড়া ছিল যাত্রীপ্রতি ৫০ পয়সা। প্রতি বছর জেলা পরিষদ থেকে ঘাট দু’টি লিজ দেওয়া হয়। বছরে ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ২০১২ সালে ঘাট দু’টি লিজে নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা অপূর্বানন্দ দাস। তাঁর দাবি, লিজ নেওয়ার সময় জেলা পরিষদ থেকে নৌকার ভাড়া বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পর আর কোনও তারা আর কোনও শাড়াশব্দ না করায় তিনি নদী পারাপারের ‘পারানি’ ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ টাকা করেন। কিন্তু তারপরেও তাঁর লোকসান হতে থাকায় তিনি প্রশাসনের সব দফতরে বিষয়টি জানান। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ অপূর্বানন্দের। নিরুপায় হয়ে মাস দুয়েক আগে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ভাড়া ৪ টাকা করার নির্দেশ দেয়। বর্ধিত ভাড়া আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশের উপর।
গোবদিয়া নদীর বেহাল চিন্তামণি ঘাট। ছবি: দিলীপ নস্কর।
আচমকা এই ‘অস্বাভাবিক’ ভাড়া বৃদ্ধিতে যাত্রীরা অসন্তুষ্ট। অবাক হয়েছেন অপূর্বানন্দবাবু নিজেও। তাঁর কথায়, “প্রশাসনের কাছে বহু আবেদনেও সাড়া না পেয়ে আমি ভাড়া বাড়ানোর জন্যই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। ভেবেছিলাম হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে ভাড়া বেড়ে হয়তো দেড় কি দুই টাকা হবে। কিন্তু ভাড়া যে এতটা বেড়ে যাবে আশা করিনি।” তিনি আরও জানান, জেলা পরিষদের নথিতে ২০০৫ সাল থেকে ওই নদীপথে দু’টি ঘাটের মধ্যে দূরত্ব দেখানো রয়েছে তিন কিলোমিটার। কিন্তু বাস্তবে ওই দূরত্ব হল ৪০০ মিটার। স্বাভাবিক ভাবেই এতটা ভাড়া বাড়ায় যাত্রীরা ক্ষুদ্ধ। শুনানির সময় আদালতে পুরো বিষয়টি তিনি জানিয়েছিলেন। সব শুনেই বিচারক এই নির্দেশ দেন। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চিন্তামণি ঘাটের অবস্থাও খুব খারাপ।
আদালতের নির্দেশমত পুলিশ বর্তমানে যাত্রীপ্রতি চার টাকা করেই ভাড়া আদায় করছে। এর ফলে মাঝে মধ্যেই ঘটছে যাত্রী বিক্ষোভ। কয়েক দিন আগেই ক্ষুদ্ধ যাত্রীরা ভাড়া আদায়কারী পুলিশ কর্মীদের রাত অবধি ঘেরাও করেও রেখেছিলেন। জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, “ওই ঘাট মালিক ভাড়া বাড়ানোর জন্য আমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। ওই বিষয়ে ভাবনাচিন্তাও করা হচ্ছিল। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন। এখন ভাড়া বাড়ানো নিয়ে হাইকোর্ট যে নিদের্শ দিয়েছে তা মানতেই হবে। যাত্রীদেরও তা মেনে নেওয়া উচিত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.