‘তুলাল পাহাড়ির দেশে যা’ কবিতাটি ঝুমুরের সুরে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরছিল সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। বাউল কবি অরুণ চক্রবর্তী ১৯৭২ সালে এটি রচনা করেছিলেন এবং জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা সেই গান আজ চল্লিশ বছর পার করে এল। সেই উপলক্ষেই সহজিয়ার এই নিবেদন। উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে একটি রেকর্ড কোম্পানি থেকে বাঁকুড়ার সুভাষ চক্রবর্তী এই গানটি গেয়েছিলেন। লোকগীতির এক শ্রেণির শ্রোতা আছেন যাঁরা এ রকমই বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নিজেদের ভাললাগা প্রকাশ করেন। এ দিনও দেখা গেল সেই নবীন ও প্রবীণের মেলবন্ধন। |
সহজিয়া সেই সব কবি ও শিল্পীকে সে দিন মঞ্চে হাজির করিয়েছিলেন যাঁরা শুধু জনপ্রিয় নন, লোকগানকেও প্রাণের রসদ জুগিয়েছেন। যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কালাচাঁদ দরবেশ, মনসুর ফকির, শুভেন্দু মাইতি, সুরজিৎ-সৌমিত্র (ভূমি), অনিন্দ্য-উপল (চন্দ্রবিন্দু), কালিকাপ্রসাদ (দোহার), লোপামুদ্রা, শিলাজিৎ, হিরণ মিত্র, কামাল নাসের, সুভাষ চক্রবর্তী, অভিজিৎ বসু থেকে আরও অনেকেই। এ ছাড়াও ছিলেন দোহার, মহুল এবং সহজিয়া লোকগানের দল। অনেক গানের মধ্যে বেশ কিছু গান মন ও হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তার মধ্যে লোপামুদ্রার ‘ঘরের কাছে আরশি নগর’, শুভেন্দু মাইতির ‘আসিল বসন্ত ঋতু’, কালিকাপ্রসাদের ‘বাংলা মায়ের কোলে’, চন্দ্রবিন্দুর ‘ভিনদেশী তারা’, কালাচাঁদ দরবেশের ‘ঘরের মধ্যে ঘর বানাইয়া’। শিলাজিৎ, সুরজিৎ ও মনসুর ফকিরের যুগ্ম কণ্ঠে ‘মিলন হবে কত দিনে’ মাতিয়ে দেয় পুরো প্রেক্ষাগৃহ। মেতে ওঠেন শ্রোতারাও। এ দিন ভাল লেগেছে লাল পাহাড়ি গানটিকে নিয়ে কামাল নাসেরের একটি অনবদ্য মৌলিক গান ‘সে এক অদ্ভুত লোক’। বা সহজিয়ার ‘নদী দেখিয়া’-র সঙ্গে মহিনের ঘোড়াগুলির আব্রাহাম মজুমদারের অনবদ্য জ্যাজ-ভায়োলিন ইমপ্রোভাইজেশন। সূত্রধর দেব চৌধুরী তাঁর দায়িত্ব পালনে উত্তীর্ণ। |