শুরুতেই হোঁচট। প্রকল্প থমকে গেল পরিকল্পনার স্তরেই।
যাদবপুরের পুরনো বাজারটি সংস্কার করে আধুনিকমানের বাজার তৈরির পরিকল্পনা করেছিল কেআইটি। অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসন নিয়ে আপত্তি তোলায় পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রয়েছে। কবে এ কাজ শুরু হবে তার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। অন্য দিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিয়মিত সংস্কারের অভাবে বাজারটির অবস্থা খারাপ। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। |
কেআইটি-র বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওএসডি) লিয়াকত আলি বলেন, “আমি এই বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আধুনিকীকরণের পরিকল্পনাটি তাঁদের পছন্দ হয়নি। তাঁরা পুনর্বাসন সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের একটি খসড়া পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছি। এখনও কোনও পরিকল্পনা জমা পড়েনি। প্রস্তাব পাওয়ার পরে আলোচনায় বসব।”
যাদবপুর কেআইটি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিভূতিভূষণ পালের কথায়: “যে পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে তা অনেক পুরনো। আরও উন্নতমানের পরিকল্পনা করা যেতে পারে। পুনর্বাসনের সমস্যা ছাড়াও অনেকগুলি বিষয়ে কেআইটি-র সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। লিখিত ভাবে কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানাননি। মৌখিক কথা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা নিজেরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কেআইটিকে লিখিত ভাবে প্রস্তাব জানাতে অনুরোধ করব। তার পরে আলোচনায় বসব।” |
২০০৯-’১০ আর্থিক বছরে কেআইটি এই বাজারের সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, পুরনো বাজার ভেঙে দোতলা বাজার হবে। থাকবে পার্কিংয়ের জায়গা এবং দমকলের প্রবেশপথ। এর পরেই সমস্যা তৈরি হয়। কেআইটি-র এক আধিকারিক জানান, পুরনো বিল্ডিং আইন মেনেই এই বাজারটি তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমান আইন অনুযায়ী দমকলের প্রবেশপথ রাখতে হবে। জায়গাটি যানজটপ্রবণ। অনেকে গাড়িতে বাজার করতে আসেন। কিন্তু এই বাজারে কোনও পার্কিং ব্যবস্থাই নেই। রাস্তার ধারেই গাড়ি পার্ক করা থাকে। নতুন বাজারে ভূগর্ভস্থ পার্কিং তৈরির পরিকল্পনা ছিল। এ ক্ষেত্রে এক তলায় যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সবাইকে স্টল দেওয়া সম্ভব হবে না। পরিকল্পনার এই অংশ নিয়েই ব্যবসায়ীরা আপত্তি জানান বলে এই আধিকারিক অভিযোগ করেন।
কেআইটি সূত্রে খবর, ১৯৭৫-এ উদ্বোধন হওয়া এই বাজারের স্টল সংখ্যা ৩০০। এখন স্টলগুলির অবস্থা খারাপ। ছাদের চাঙড় ভেঙে পড়েছে। বৃষ্টির জল চুঁইয়ে পড়ে। নিকাশির অবস্থাও খারাপ। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মিহিররঞ্জন রায়ের অভিযোগ, “বাজারের যা অবস্থা তাতে যে কোনও সময়েই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বার বার বলা সত্ত্বেও কেআইটি সারায়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়েই তাঁদের দোকানের অংশ সারিয়ে নিয়েছেন। কোনও বিপদ হলে কেআইটি দায়ী হবে।” |
কেআইটি কর্তৃপক্ষ জানান, অর্থের অভাবে সংস্কার করা যায়নি। আগামী বাজেটে বাজারটির মেরামতির জন্য অর্থ বরাদ্দের পরিকল্পনা রয়েছে। নগরোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “অর্থের অভাব রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে অর্থের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।”
|