উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
দুর্ভোগ
নরকযাত্রা
শ্মশানযাত্রা যেন নরকযাত্রা!
শতাব্দী-প্রাচীন পানিহাটি শ্মশানে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা এমনই। অভিযোগ, শ্মশান এবং সংলগ্ন গঙ্গাপাড় আবর্জনাময় হয়ে থাকে।
উত্তর শহরতলি এলাকায় ব্যারাকপুরের পরে একমাত্র পানিহাটি শ্মশানেই বৈদ্যুতিক চুল্লি আছে। ফলে সেখানে প্রতি দিনই যথেষ্ট চাপ থাকে। বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দিনে ২০টি মৃতদেহের সৎকার সম্ভব। আছে পুরনো কাঠের চুল্লিও। কিন্তু অভিযোগ, এমন ব্যস্ত শ্মশানটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। নোংরা ছড়িয়ে থাকে। দুর্ভোগে পড়েন শ্মশানযাত্রীরা।
সোদপুর থেকে এসেছিলেন শান্তনু মণ্ডল। বললেন, ‘‘ঝাঁ চকচকে না হোক, অন্তত ন্যূনতম পরিচ্ছন্নতা তো থাকবে। চার পাশে মৃতদেহের পোশাক, তোষক, বালিশ, আবর্জনা পড়ে থাকে। পচা গন্ধ ছড়ায়। অথচ কারও কোনও হুঁশ নেই।’’
পাশাপাশি চলছে গঙ্গাদূষণ। দাহের পরে সবাই গঙ্গায় স্নান করেন। গঙ্গায় আবর্জনা না ফেলার জন্য পুরসভার সতর্কীকরণ বোর্ডও আছে। তবু গঙ্গার ধার জুড়ে ছেঁড়া কাঁথা, প্লাস্টিক পড়ে থাকে। শ্মশানের মধ্যে একটি ময়লা ফেলার ভাঙাচোরা গাড়ি আছে। অভিযোগ উঠেছে, নিয়মিত গাড়ির ময়লা সাফ করা হয় না, ময়লা উপচে পড়ে। যদিও পানিহাটি পুরসভা এবং শ্মশান-ম্যানেজার ভোলানাথ পাত্রের দাবি, নিয়মিত ময়লা পরিষ্কার করা হয়। অভিযোগ, ময়লা ফেলার জায়গা না-থাকায় বিটি রোডের ধারে রাতের অন্ধকারে জঞ্জাল ফেলে পুরসভার গাড়ি। বেশি রাতে সেই জঞ্জাল আগুনে পোড়ানোও হয়।
শুধু আবর্জনাই নয়, পরিকাঠামোর অভাবের অভিযোগও তুলেছেন শ্মশানযাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, বসার জায়গা কম। শেডটিও ভাঙাচোরা। বর্ষায় ভিজতে হয়। অন্য দিকে, বছর পনেরো আগে বসানো ইলেকট্রিক চুল্লিটি প্রচণ্ড চাপে থাকে। আরও একটি ইলেকট্রিক চুল্লি বসানোর দাবি উঠলেও অর্থাভাবে ইলেকট্রিক চুল্লি বসানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুরসভা। ফলে ইলেকট্রিক চুল্লিটি নিয়মমাফিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ থাকলে কাঠের চুল্লির ব্যবহারে আবর্জনা আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বসার জায়গা না-থাকায় শ্মশানযাত্রীরা অনেক সময় দোকানে এসে বসেন। ব্যবসার সমস্যা হলেও মানবিকতার কারণে কিছু বলা যায় না। আবর্জনা থেকে বিকট গন্ধ ছড়ায়। দিনরাত শ্মশানে ভিড় থাকে। বৃষ্টি হলে খুব অসুবিধা হয়। যদিও পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান চারণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সমস্যা আছে বলে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

ছবি: প্রণব বিশ্বাস




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.