উত্তর কলকাতা
আটকে উদ্বোধন
নামের গেরো
মুখ ভার ছোট্ট অনীকের। সামনেই স্লিপ। কিন্তু খেলতে পারছে না সে। গেট যে বন্ধ। কারণ, নাম ঠিক না হওয়ায় এখনও উদ্বোধন হয়নি বি কে পাল পার্কের মধ্যে নির্মিত এই শিশু উদ্যানটির।
উত্তর কলকাতার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বি কে পাল পার্কের মধ্যে এই শিশু উদ্যানটি তৈরি হয়েছে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “শিশু উদ্যানটির নাম এই ওয়ার্ডের প্রয়াত প্রাক্তন কাউন্সিলর সুব্রত হালদারের নামে করার প্রস্তাব এসেছে। বিষয়টি নিয়ে কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই মেয়র পারিষদের আলোচনায় বিষয়টি রেখেছি। তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নাম ঠিক না হওয়া পর্যন্ত উদ্বোধন করা সম্ভব হচ্ছে না।”
জটিলতা কোথায়?
পুরসভা সূত্রের খবর, বি কে পাল পার্কের মধ্যে নির্মিত শিশু উদ্যানটির অন্য কোনও নাম করা যায় কি না তা নিয়েই সমস্যা। পুরসভা সূত্রে খবর, নিয়ম অনুযায়ী কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর তিন বছর পরে তাঁর নামে কোনও কিছুর নামকরণ করা যায়, তার আগে নয়। ২০০০ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত হালদার মারা যান ২০১১-য়। ফলে শিশু উদ্যানের নাম তাঁর নামে রাখলে, নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উঠবে। যদিও দেবাশিসবাবু বলেন, “রাস্তার নামকরণের ক্ষেত্রেই ওই নিয়ম মানতে হয়। উদ্যানের নামকরণের ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই।” তবে বি কে পালের নামাঙ্কিত পার্কের একটি অংশের অন্য নামকরণ করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে দেবাশিসবাবু জানান।
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই ব্যাপারে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। পুরসভার নিয়ম মেনে আলোচনার পরেই নামকরণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর তৃণমূলের শিখা সাহার কথায়: “উদ্যানটি প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে। ঘাস বসানোর কাজ চলছে। জনপ্রিয় এই পুর-প্রতিনিধিকে স্মরণ করতেই নতুন শিশু উদ্যানটি তাঁর নামে করার কথা ভাবা হয়েছে। প্রস্তাবটি পুরসভাকে জানানো হয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।” পার্ক জুড়ে ছোটদের নানা খেলার জিনিস। দেওয়াল জুড়ে নানা ছবি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগেও এখানে শিশুরা খেলত। জায়গাটিকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। স্লিপ বসেছে। দোলনা আসছে। ছোটরা খুব আগ্রহও দেখাচ্ছে। কিন্তু উদ্বোধন না হওয়ায় তারা খেলতে পারছে না।
পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী সিপিএমের রূপা বাগচী বলেন, “বি কে পাল পার্কের নাম সবাই জানে। এই পার্কের মধ্যে নির্মিত কোনও শিশু উদ্যানের নাম অন্য কারও নামে করার কোনও যৌক্তিকতা নেই। প্রায়ত কাউন্সিলরকে শ্রদ্ধা জানাতে পুরসভারই অন্য কোনও পার্কের নাম তাঁর নামে রাখা যেতে পারে।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.