‘দোষী’ মোহন-কর্তাদের শাস্তির দাবিতে রাস্তায় প্রাক্তন ফুটবলাররা
তবর্ষের ক্লাবকে নজিরবিহীন নির্বাসনের দিকে ঠেলে দেওয়া কর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে এ বার মাঠে নেমে পড়লেন মোহনবাগানের এক ঝাঁক প্রাক্তন ফুটবলার। ফেডারেশনের কাছে আবেদনের কাগজে সই করে একযোগে তাঁরা দাবি তুললেন, ‘ক্লাবকে নয়, শাস্তি দেওয়া হোক দোষী কর্তাদের’।
মোহনবাগান আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিসনে চলে যেতে পারে এই আশঙ্কায় প্রিয় ক্লাবকে বাঁচাতে সুব্রত ভট্টাচার্য, উলগানাথন, মানস ভট্টাচার্য, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদেশ বসুরা যে মঞ্চে সামিল হলেন, সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু রাজনৈতিক নেতা হুমকিও দিয়ে রাখলেন টুটু বসু-অঞ্জন মিত্রদের। বলে দিলেন, “পনেরো জানুয়ারি ফেডারেশন কর্মসমিতির সভা পর্যন্ত অপেক্ষা করব। মোহনবাগানকে যদি দ্বিতীয় ডিভিসনে খেলতে হয় তা হলে কোনও কর্তাকেই ক্লাবে ঢুকতে দেওয়া হবে না।” যা শুনে ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্রের সতর্ক প্রতিক্রিয়া, “আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না। প্রশাসন আছে। ওরাই সব দেখবে।”
নির্বাসন-আতঙ্কে একজোট। শুক্রবার মোহনবাগান লেনের সভায় বিদেশ বসু, সুব্রত ভট্টাচার্য,
মানস ভট্টাচার্য, শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র
উত্তর কলকাতায় সবুজ-মেরুনের ধাত্রীগৃহ মোহনবাগান লেনে শুক্রবার ক্লাবকে বাঁচাতে এবং ডার্বি ম্যাচে দল তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া কর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে সই সংগ্রহ শুরু হয়। কর্মসমিতির সদস্য কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ মূল উদ্যোক্তা। ১৯১১-র ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ড জয়ী শিবদাস-অভিলাষদের আবক্ষ মূর্তির সামনেই ভিড় জমিয়েছিলেন কয়েকশো সদস্য-সমর্থক। এই সভা অন্য মাত্রা পেয়ে যায় দু’টি কারণে
এক) সত্তর-আশির দশকের প্রাক্তন তারকা ফুটবলারদের যোগদান।
দুই) শাসকগোষ্ঠীর বিরোধী পক্ষ বলে পরিচিত প্রাক্তন সহ-সচিব বলরাম চৌধুরী, শম্ভু ঘোষ, বিধানসভা সদস্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতি।
উদ্যোক্তারা জানান, ১৪ জানুয়ারি দিল্লির ফুটবল হাউসে গিয়ে গণস্বাক্ষরের কাগজ তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি ক্লাব তাঁবুর সামনে ১৪৪ ধারা ভেঙে শুরু হবে অবস্থান।
এত দিন ক্লাব তাঁবুর সামনে সমর্থকদের বিক্ষোভ বা মোমবাতি মিছিলকে গুরুত্ব দিতে চাননি কর্তারা। কিন্তু যাঁরা বহু ট্রফি এনে দিয়েছেন, ক্লাবের ‘মুখ’ সেই প্রাক্তন ফুটবলাররা রাস্তায় নেমে পড়ায় তীব্র অস্বস্তিতে তাঁরা। বিভিন্ন মিডিয়ায় মন্তব্য করলেও প্রকাশ্যে এই প্রথম নামলেন প্রশান্ত-উলগা-শ্যামলরা। এ দিন, ‘ক্লাবের নির্বাসন তুলে নিন, দোষী কর্তাদের শাস্তি দিন’ এই দাবিতে স্বাক্ষর করে প্রকাশ্যে তোপ দাগলেন সুব্রত-মানসরা। সুব্রত বলে দিলেন, “গত বার কোচ থাকার সময় আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল। এই কর্তারা প্রাক্তনদের সম্মান দেন না।” আর মানসের মত, “ডার্বি ম্যাচে বিরতিতে দল তুলে নেওয়াটা বড় ভুল। কর্তারা আইনটাই জানতেন না। ম্যাচ কমিশনার তাদের আইন বোঝানো সত্ত্বেও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তারা।” সই সংগ্রহ অভিযানে উপস্থিত হলেও বিরোধী গোষ্ঠীর কর্তা বলরাম চৌধুরী কোনও তোপ দাগেননি। বলে দেন, “আগে ক্লাবের শাস্তিটা বাঁচুক। তারপর তো সব কিছু।” এ দিন গোষ্ঠ পাল মূর্তির নীচে এবং ক্লাব তাঁবুতেও সই সংগ্রহ করেন কিছু সদস্য-সমর্থক। ক্লাবকে বাঁচানোর তাগিদে। কিন্তু সেটা কি সম্ভব?
ফেডারেশনের শাস্তি কমানোর সভার দিন যত এগিয়ে আসছে তত চাপ বাড়ছে মোহন-কর্তাদের উপর। সকলেরই প্রশ্ন, এবছর ওডাফা-টোলগেরা আই লিগে খেলতে পারবে কি? ক্লাব দ্বিতীয় ডিভিসনে নেমে যাবে না তো? টানা বাইশ বছর ক্ষমতায় আছেন টুটু-অঞ্জনরা। কোনও দিন ঘরে-বাইরে এ রকম চাপে পড়েননি। এ দিন ক্লাব তাঁবুতে কোনও বড় কর্তা আসেননি। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত খবর, কর্মসমিতির সভার দু’দিন আগেই দিল্লি পৌছে যাচ্ছেন কর্তারা। ১৫ জানুয়ারির সভা যে, মোহন কর্তাদের কাছে জীবনের ‘কঠিনতম ম্যাচ’!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.