|
|
|
|
বৈঠক করার আশ্বাস দিয়ে ঘেরাও মুক্ত তৃণমূল প্রধান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জমিদাতা পরিবারের যুবকদের নিয়ে বৈঠক করার লিখিত আশ্বাস দিয়ে ঘেরাও মুক্ত হলেন খড়্গপুর ২ ব্লকের চাঙ্গোয়ালের তৃণমূল প্রধান।
চাকরির দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে চাঙ্গোয়ালের প্রধানকে ঘেরাও করা রেখেছিলেন জমিদাতা পরিবারের যুবকেরা। খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন খড়্গপুরের সিআই অরিন্দম দাস। তারপরেও রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঘেরাও হয়ে থাকতে হয় প্রধানকে। শেষমেশ খড়্গপুরের মহকুমাশাসক আর বিমলা ও কারখানার জেনারেল ম্যানেজার রঞ্জিত সরকারকে নিয়ে যুবকদের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যাপারে প্রধান লিখিত ভাবে আশ্বাস দিলে ঘেরাও তুলে নেন যুবকেরা। চাঙ্গোয়ালের তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান শিবপ্রসাদ মল্লিক বলেন, “আগামী শুক্রবার বৈঠক হবে। বৈঠকে মহকুমাশাসক, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, কারখানার জেনারেল ম্যানেজার থাকবেন। যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের প্রতিনিধিও থাকবেন।”
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, ক’বছর আগে খড়্গপুর শিল্পতালুকে ট্রাক্টর ইন্ডিয়া লিমিটেড নামে একটি কারখানা গড়ে উঠেছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, শুরুতে কারখানার কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, জমিদাতা পরিবারের এক জনকে কারখানায় কাজ দেওয়া হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই প্রতিশ্রুতি রাখছেন না। অন্য এলাকার শ্রমিকেরা কাজ করছেন কারখানায়, স্থানীয় যুবকদের কাজ দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত কাজ দেওয়ার দাবিতেই বৃহস্পতিবার প্রধানকে ঘেরাও করে রাখেন জমিদাতা পরিবারের প্রায় ৮৯ জন যুবক। যাঁরা আইটিআইতে পড়াশোনা করছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এই যুবকেরা আইটিআইতে ভর্তি হন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। বিক্ষোভকারীদের দাবি, আইটিআই পাশ করার আগেই তাঁদের কাজের সুযোগ দিতে হবে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঙ্গোয়ালে এসে এক বৈঠক করার কথা ছিল ওই কারখানার জেনারেল ম্যানেজার রঞ্জিত সরকারের। তবে দুপুরের আগেই তিনি প্রধানকে জানান, আসতে পারবেন না বলে। প্রধানের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে একদল যুবক কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানকে ওই বিক্ষোভে হাজির থাকার জন্যও জোরাজুরি করেন তাঁরা। প্রধান জানান, তাঁর পক্ষে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। এরপরই স্থানীয় এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রধানকে ঘেরাও করে রাখা হয়।
শিবপ্রসাদবাবুর কথায়, “কারখানার গেটে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তা আমি জমিদাতা পরিবারের যুবকদের জানাই। কিন্তু ওঁরা কিছুতেই বুঝতে চাইছিলেন না।” সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। পরিস্থিতি দেখে জমিদাতা পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিরোধী-শিবির। খড়্গপুরের সিপিআই নেতা বিপ্লব ভট্ট বলেন, “স্থানীয় যুবকদের দাবি যুক্তি সঙ্গত। অন্য এলাকার শ্রমিকেরা কাজ করবেন, স্থানীয়রা কারখানায় কাজ পাবেন না, তা হতে পারে না।” স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সলিল মাণ্ডিও বলেন, “যোগ্যতা অনুযায়ী স্থানীয়দের কাজে নেওয়া উচিত। আশা করব, বৈঠকের মাধ্যমেই সমাধানসূত্র বেরোবে।” অবস্থা বুঝে স্থানীয়দের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলও। দলের জেলা নেতা অজিত মাইতি বলেন, “আশা করব, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন। তবে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেউ অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলে, তা ভাল হবে না। আমরাও তা বরদাস্ত করব না। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। গোলমাল করে কিছু হয় না। এটা সকলেরই বোঝা উচিত।”
আপাতত, সকলের নজর আগামী শুক্রবারের বৈঠকের দিকেই। |
|
|
|
|
|