বেশ নিশ্চিন্তেই বিমানে চড়েছিলেন অস্ট্রেলীয় যাত্রীরা। কিছুক্ষণ পর বিমান যখন প্রায় মাঝ-আকাশে, তখনই সেই অদ্ভুত দৃশ্য। যাত্রীরা জানলার ফাঁক দিয়ে দেখতে পান মেঘের পাশাপাশি উুঁকি মারছে এক পাইথন। বিমানের ডানার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জুড়ে রয়েছে তাঁদের এই সফরসঙ্গী। বিস্মিত যাত্রীরা। কী করে হল এমন?
যে সংস্থার বিমান, সেই কোয়ান্টাস জেটের তরফে জানানো হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড সিটি থেকে পাপুয়া নিউ গিনির পোর্ট মোরেসবিতে যাচ্ছিল বিমানটি। বৃহস্পতিবার বেশ সকালেই ওড়ে সেটি। কিন্তু তখনও ওই ‘অনিমন্ত্রিত’ যাত্রীর দেখা মেলেনি বলেই দাবি করেছে বিমানসংস্থা। বেশ কিছুটা উঁচুতে ওড়ার পর যাত্রীদের একাংশ দেখতে পান ন’ফুট লম্বা পাইথনটিকে। ‘স্নেকস অন আ প্লেন’ ছবিটির কথা মনে পড়ে গিয়েছিল বেশ কিছু যাত্রীর। সেখানে উপর থেকে ঝুলে পড়া অক্সিজেন মাস্কের সঙ্গে নেমে এসেছিল অগুনতি বিষধর সাপ। এ ক্ষেত্রে কোয়ান্টাস জেটের বিমানের ভিতরে অবশ্য ঢুকতে পারেনি পাইথনটি।
তা হলে বিমানের বাইরে ঠিক কী হয়েছিল? যাত্রীদের বক্তব্য, বিমানের ডানায় জড়িয়ে থাকায় বাইরের প্রচণ্ড হাওয়া আর শীতের সঙ্গে মরণপণ লড়াই করতে হয়েছে পাইথনটিকে। |
টানা দু’ঘণ্টার সফরে সেই চেষ্টা নিজের চোখে দেখেছেন তাঁরা। বার বার হাওয়ার বেগে পিছলে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল পাইথনটির। আর প্রত্যেক বারই সে আরও আঁকড়ে ধরছিল ডানাটিকে। ফলে ভয় দেখানোর কোনও সুযোগই ছিল না তার কাছে।
যদিও চেষ্টা সত্ত্বেও শেষরক্ষা হয়নি। শেষমেশ যখন পোর্ট মোরেসবিতে এসে পৌঁছয় বিমান, তখনও তার ডানায় লেগে পাইথন। বা বলা ভাল পাইথনের নিথর দেহ। অসম লড়াইয়ে হার হয়েছে তার।
তবে যাত্রীদের দাবি, যাত্রার দরুন কখনওই ‘স্নেকস অন আ প্লেন’-এর মতো ত্রাস ছড়ায়নি। বরং এ হেন ‘স্নেক আউসাইড এ প্লেন’-এ প্রথম দিকে বেশ বিস্মিত বোধ করেছেন তাঁরা। সাপের সঙ্গে বিমানযাত্রা, এ কী কম প্রাপ্তি। তবে ঘড়ির কাঁটা যতই এগিয়েছে, ততই সাপটিকে একটু একটু করে নির্জীব হয়ে পড়তে দেখেছেন তাঁরা। তার পর একটা সময়, সম্পূর্ণ নিশ্চল হয়ে পড়ে রইল সে। বিস্ময়ের ফাঁক গলে তাই শেষমেশ দুঃখই রয়ে গেল যাত্রীদের মনে। বুকে-হাঁটা সফরসঙ্গীর এ হেন আকাশযাত্রা বুকে যে বেশ বেজেছে সহযাত্রীদের। |