|
|
|
|
অসহযোগিতার অভিযোগ পড়ে যন্ত্রপাতি,
সাত মাসেও রাস্তা সংস্কার শুরুই হল না |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুড়শুড়া |
অর্থ বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। ‘ওয়ার্ক-অর্ডার’ মিলেছে। বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা যন্ত্রপাতি নিয়েও হাজির। কিন্তু সাত মাসেও পুড়শুড়া মোড় থেকে ডিহিভুরসুট পর্যন্ত ৭.২ কিলোমিটার বেহাল রাস্তাটি সংস্কারের কাজ এখনও শুরুই হল না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ তুলেছে পূর্ত (সড়ক) দফতর।
ওই কাজের জন্য রাস্তার ধারের বেশ কিছু বিদ্যুতের খুঁটি এবং বেআইনি নির্মাণ সরাতে হবে। গাছও কাটতে হবে।
এ কথা জানিয়ে পূর্ত (সড়ক) দফতরের আরামবাগ মহকুমার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌম্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তা সংস্কারের বাধাগুলি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক এবং তদ্বির করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “মিটিং ডেকে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে পদ্ধতি মেনে গাছ কাটার কথা বলে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরকেও খুঁটি সরাতে বলা হয়েছে। বিলম্বের কারণ খতিয়ে দেখে শীঘ্র ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বিডিওকে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুড়শুড়া ও হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের সংযোগকারী ২২ কিলোমিটার রাস্তাটির মধ্যেই পড়ে ওই ৭.২ কিলোমিটার। যে অংশের বেহাল দশা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। পুড়শুড়া, খানাকুল এবং হাওড়ার অনেকগুলি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ ওই রাস্তার উপরে নির্ভরশীল। তা ছাড়া, তারকেশ্বর বা আরামবাগের সঙ্গেও ওই রাস্তার যোগ রয়েছে। রাস্তাটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে অবরোধ, বিক্ষোভ, প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি প্রায়ই নেওয়া হয়। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনাও ঘটে।
পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকাবাসীর দাবি মেনে ওই ৭.২ কিলোমিটার রাস্তাটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি, ঠিক হয় ৩.৮ মিটার থেকে রাস্তাটি ৫.৫ মিটার চওড়া করা হবে। এ জন্য বরাদ্দ হয় ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। রাস্তাটি নির্মাণের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা জুন মাসের মাঝামাঝি যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ শুরু করতে চলে আসে। রাস্তা চওড়া করার বাধাগুলি চিহ্নিত করে ম্যাপ তৈরি করে তাদের পক্ষ থেকে ব্লক প্রশাসন এবং পূর্ত দফতরকে দেওয়া হয়।
ওই সংস্থার পক্ষে অম্লান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকায় চারটি পঞ্চায়েত (শ্রীরামপুর, পুড়শুড়া-১, চিলাডাঙ্গি এবং শ্যামপুর) পড়ছে। দেড়শোরও বেশি গাছ কাটতে হবে। প্রায় ৪০টি বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে হবে এবং প্রায় দু’কিলোমিটার জুড়ে দখল হয়ে যাওয়া রাস্তা মুক্ত করতে হবে। কিন্তু প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে দেখা যাচ্ছে না। ফতেপুরে যন্ত্রপাতি বসিয়ে রেখে আমরা লোকসান গুনছি।”
পুড়শুড়ার বিডিও সম্রাট মণ্ডল জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতগুলিতে গাছ কাটা নিয়ে প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে। বন দফতরের অনুমতি নিয়ে গাছ কাটার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। রাস্তা দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়াও চলছে। বিদ্যুতের খুঁটি সরানো প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আরামবাগ ডিভিশনের ম্যানেজার চন্দন মণ্ডল বলেন, “খুঁটি সরানোর ক্ষেত্রে পূর্ত (সড়ক) দফতরকে আমাদের স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে সমীক্ষা করার জন্য চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু ওঁরা এখনও আসেননি।”
এই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেননি মহকুমা পূর্ত (সড়ক) দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌম্য চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমি দু’বার সমীক্ষার ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা থেকে কোনও উত্তর পাইনি।”
এই পরিস্থিতিতে রাস্তা সংস্কারের কাজ ঠিক কবে শুরু হবে সে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। |
|
|
|
|
|