|
|
|
|
জাঙ্গিপাড়ায় অভিযুক্ত তৃণমূল |
সিপিএম কার্যালয়ে নিগ্রহ, হামলা হল দুই নেতার গাড়িতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জাঙ্গিপাড়া |
রেজ্জাক-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক আবহ এখনও উত্তাল। এর মধ্যেই শুক্রবার হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় সিপিএমের জোনাল কমিটির কার্যালয়ে ঢুকে সম্পাদককে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। হামলা চালানো হয় সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরী এবং ওই দলেরই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্যের গাড়িতে। বিষয়টিকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে লঘু করার চেষ্টা করেছেন তৃণমূলের তরফে জাঙ্গিপাড়া এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “পুলিশ যা কিছু ব্যবস্থা নিক।”
তবে, রেজ্জাক-কাণ্ডের পরে জাঙ্গিপাড়ার ঘটনা সামনে চলে আসায় শাসক দলের বিরুদ্ধে আরও জোরদার আন্দোলনে নামতে চলেছে সিপিএম। এ দিনই এক প্রেস বিবৃতিতে দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু জানান, বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সিপিএমের কার্যালয়ে এবং নেতা-কর্মীদের উপরে আক্রমণ করছে। পুলিশ-প্রশাসনও এই ধরনের ঘটনায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। প্রতিবাদে এ দিনই মশাট বাজার-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মিছিল ও পথসভা করে সিপিএম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে সিপিএমের জাঙ্গিপাড়া জোনাল কমিটির কার্যালয়ে একটি সভা হওয়ার কথা ছিল। উপস্থিত ছিলেন জোনাল সম্পাদক হরপ্রসাদ সিংহরায়, সুদর্শন রায়চৌধুরী, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুনীল সরকার এবং জনা পনেরো কর্মী।
|
|
হামলার পরে প্রাক্তন মন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরীর গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র |
সুদর্শনবাবু এবং শ্রীদীপবাবুর গাড়ি দু’টি রাখা ছিল কার্যালয়ের সামনে। সভা শুরু হওয়ার মুখেই নেপাল মণ্ডল নামে এক তৃণমূল কর্মী সটান ওই কার্যালয়ে ঢুকে হরপ্রসাদবাবুর জামার কলার ধরে তাঁকে বাইরে টেনে বের করে আনার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। সুদর্শনবাবুরা থামাতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়। শেষে কার্যালয়ের বাইরে অপেক্ষারত সুদর্শনবাবুর নিরাপত্তারক্ষী ঢুকে হরপ্রসাদবাবুকে উদ্ধার করেন। সেই সুযোগে বাইরে থাকা কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সুদর্শনবাবু ও শ্রীদীপবাবুর গাড়িতে হামলা চালান বলে অভিযোগ। দু’টি গাড়িরই কাচ ভাঙে। তবে, নেপালবাবুকে ধরে রাখা যায়নি। তিনি পালিয়ে যান। পণ্ড হয় সভা। সুদর্শনবাবু বলেন, “ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। এ ভাবে কার্যালয়ে ঢুকে তৃণমূল কর্মী যে গোলমাল পাকাতে পারেন, ভাবতেই পারছি না। দু’টি গাড়ি ওরা ভাঙচুর করল।” হুগলির অতিরিক্ত এসপি (সদর) তথাগত বসু বলেন, “নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ঢুকে ঝামেলা করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি।”
দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সিপিএম নেতারা জাঙ্গিপাড়া থানায় ধর্নাতেও বসেন। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় থানায় এসে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যাপারে সুদর্শনবাবুদের আশ্বস্ত করেন। থানায় যখন এই পর্ব চলছে, তখন সামনেই একটি পুরনো ঘটনার কথা তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, গত ৩ জানুয়ারি বাহিরগড় এলাকার গৌর কুণ্ডু নামে এক তৃণমূূল কর্মীর মুদি দোকান ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেয় সিপিএমের লোকজন। সেই ঘটনায় পুলিশ কেন কাউকে গ্রেফতার করেনি, সেই প্রশ্ন তুলে তৃণমূল সমর্থকেরা স্লোগান দিতে থাকেন। দেড় ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলে। এর মধ্যেই অবশ্য পুলিশি নিরাপত্তায় সুদর্শনবাবু, শ্রীদীপবাবু ও সুনীলবাবুকে তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
|
|
|
|
|
|