কিশোরীকে ধর্ষণ করতে এসে কাত কাটারির কোপে
কারও দয়া বা সাহায্যের জন্য সে অপেক্ষা করেনি। ধর্ষণ করতে আসা যুবককে বার বার কাটারির আঘাত করে নিজেই নিজেকে বাঁচিয়েছে সে। আর ধর্ষণকারীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে এখন সে মাধেপুরার ‘নায়িকা’। প্রত্যন্ত গ্রামের গরিব ঘরের ১৫ বছরের মেয়েটি পুলিশ প্রশাসনেরও ‘নয়নের মণি’ হয়ে উঠেছে। তাকে আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসে সাহসিকতার জন্য পুরস্কৃত করা হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
গত কাল রাতে ঘরে একাই ছিল ১৫ বছরের মেয়েটি। দিদির বাচ্চা হবে, তাই মা গিয়েছিলেন পূর্ণিয়ায় দিদির বাড়িতে। বাবা ও দাদা পঞ্জাবে কাজ করেন। গত দু’দিন ধরে সে একাই বাড়িতে। এরই সুযোগ নিয়েছিল গ্রামেরই ১৯ বছরের ছেলে পবন কুমার মুখিয়া। ঘর ফাঁকা পেয়ে দু’দিন ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর হাতে রক্তাক্ত হয়ে এখন সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, মাধেপুরার উধাকিষাণগঞ্জ থানার কুস্তানি গ্রামে ওই মেয়েটির বাস। প্রথম রাতে এক যুবক তার ঘরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল বলে সে পুলিশকে জানায়। কিন্তু তাকে সে চিনতে পারেনি। এই ঘটনার পরে কাউকে কিছু না বলে মেয়েটি পরের রাতে ধারালো কাটারি পাশে নিয়ে শুয়েছিল। আশঙ্কায় রাতে দু’চোখ এক করতে পারেনি মেয়েটি। তাদের ঘরটি তেমন সুরক্ষিত না হওয়ায় ভয়ও ছিল বেশি। তবুও সে সাহস নিয়ে সেদিনও একাই ঘরে ছিল। ফের যে সে আক্রান্ত হতে পারে সে আশঙ্কা ছিলই। সেটাই সত্যি করে রাত ১২টা নাগাদ ঘরে হানা দেয় ওই গ্রামেরই ছেলে, পবন কুমার। ভয় না পেয়ে ওই মেয়ে সাহস করে নিজের রাখা ওই অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে পবন কুমারকে। প্রথমে মাথায় আঘাত করলে ছেলেটি পালাতে যায়। এরপরেও সে ছাড়েনি। তাড়া করে পবনের পিঠে সে আঘাত করে। আক্রান্তকারী ছুটে পালানোর চেষ্টা করে। মেয়েটির রাগ তখনও কমেনি। তাকে আটকানোর জন্য ফের পবনের উরুতে আঘাত করে। তিনটি আঘাতের পরে পবন মাটিতে পড়ে যায়। তারপরেই মেয়েটি চিৎকার করে গ্রামের মানুষদের ডেকে তোলে। গ্রামবাসীরা এসে পবনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ এসে প্রথমে পবনকে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবর পেয়ে পরের দিন মা আশাদেবী বাড়িতে ফেরেন। তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় থানায়। মেয়ে ও মায়ের সঙ্গে কথা বলেন থানার ওসি সুরেশ প্রসাদ রাম। মেয়েটি লিখিত ভাবে পুলিশকে ওই রাতের ঘটনার কথা সবিস্তার জানায়। পুলিশকে এই অভিযোগ জানানোর পরে পবনের সঙ্গেও পুলিশ কথা বলে। পুলিশের কাছে সে যা বয়ান দিয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে থানার জানিয়েছেন।
ওসি সুরেশ প্রসাদ বলেন, “আমরা তদন্ত করে দেখেছি ছেলেটি যা বলছে তা ঠিক নয়। ওই রাতে যা ঘটেছিল তা ওই মেয়েটির ঘরেই ঘটে। অভিযোগে প্রাথমিক ভাবে পবনকে দোষী করা হয়েছে।” মাধেপুরার পুলিশ সুপার সৌরভ কুমার বলেন, “মেয়েটি সাহসের যে পরিচয় দিয়েছে তার জন্য তাকে পুরস্কৃত করা হবে। তার এই কাজের জন্য আমরা তাকে সাহসিকতার পুরস্কার দিতে চাই। জেলাশাসককে এই ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসে তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.