|
|
|
|
গডকড়ীর পথের কাঁটা দূর করতে নামল সঙ্ঘ
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ফের সভাপতি হওয়ার আগে নিতিন গডকড়ীর পথের কাঁটা ধীরে ধীরে দূর করতে সক্রিয় হলেন মোহন ভাগবত।
এ মাসেই সভাপতি পদের নির্বাচনে গডকড়ীকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে চান ভাগবত। কিন্তু সঙ্ঘ-সহ বিজেপির অনেক নেতাই গডকড়ীকে দ্বিতীয়বার সভাপতি করার পক্ষপাতী নন। লালকৃষ্ণ আডবাণী থেকে মুরলী মনোহর জোশীর মতো বিজেপির অনেক শীর্ষ নেতাই তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন সঙ্ঘ নেতৃত্বকে। পাশাপাশি রাম জেঠমলানী থেকে যশবন্ত সিন্হার মতো অনেক নেতা প্রকাশ্যে গডকড়ীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসে আছেন। যারজন্য জেঠমলানীকে দল থেকে বহিষ্কার করার নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গডকড়ীর অভিষেক নিষ্কন্টক করতে সঙ্ঘ নেতৃত্ব সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
আজ মোহন ভাগবত দিল্লিতে। আজই গডকড়ী বৈঠক করেন আডবাণীর সঙ্গে। সেখানে রাম জেঠমলানীকেও ডাকা হয়। জেঠমলানীর ছেলে মহেশও প্রথম প্রকাশ্যে সোচ্চার হয়েছিলেন গডকড়ীর বিরুদ্ধে। মহেশ ইতিমধ্যেই ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিয়েছেন, গডকড়ী যদি ফের সভাপতি পদের জন্য মনোনয়ন পেশ করেন, তাহলে তিনিও নির্বাচনে লড়বেন। তাতে তাঁর জেতার কোনও সম্ভাবনা নেই বটে। কিন্তু গডকড়ীর নির্বাচন যে ‘নির্বিরোধ’ নয়, সেই বার্তাই দিতে চান তিনি। ভাগবত অবশ্য চান, গডকড়ীর জয় নির্বিরোধ হোক। সে কারণে তাঁর নির্দেশে আজ রাম জেঠমলানীকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানানো হয়, যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা সম্ভব হয়। রাম জেঠমলানীকে দলে বহাল রেখে মহেশকেও নিরস্ত্র করা যায়।
বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, রাম জেঠমলানীকে দলে বহাল রাখার ব্যাপারে দলের অনেকেরই আপত্তি রয়েছে। বিশেষ করে অরুণ জেটলির মতো নেতার। ভবিষ্যতেও জেঠমলানী যে দলকে বিপাকে ফেলবেন না, সে নিশ্চয়তাও নেই। তা জেনেও দলের চলতি সমীকরণের কথা মাথায় রেখে এই ঝুঁকি নিলেন গডকড়ী। নরেন্দ্র মোদী গুজরাত জয়ের পর যখন দিল্লি এসেছিলেন, তখনই জেঠমলানীকে দলে বহাল রাখার পথ প্রশস্ত করে গিয়েছিলেন। জেঠমলানী মোদীর শুধু আইনজীবীই নন, গডকড়ীকে সরানোর দাবি তুলে বহুবার মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার ব্যাপারেও সোচ্চার হয়েছেন তিনি। দলে বহাল রাখার শর্তে জেঠমলানী একটি চিঠিও লিখেছেন গডকড়ীকে। যেখানে গডকড়ীর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অনিয়মের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন জেঠমলানী। গডকড়ীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য ‘আক্ষেপ’ও প্রকাশ করেন তিনি।
আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডেকে জেঠমলানীকে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে। কিন্তু আজ আডবাণীর বাড়িতে এই বৈঠক ডেকেও সঙ্ঘ নেতৃত্ব একটি চাল দিলেন। আডবাণী গডকড়ীর মেয়াদ বৃদ্ধিতে অসন্তুষ্ট তো বটেই, এমনকী যশবন্ত সিন্হা বা যশোবন্ত সিংহের মতো যে নেতারা আপত্তি জানিয়েছিলেন, তাঁরাও আডবাণী ঘনিষ্ঠ। সঙ্ঘ সূত্রের মতে, গডকড়ীর মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সম্মতি আদায় করতে সঙ্ঘ নেতা ভাইয়াজি জোশী ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন আডবাণীর সঙ্গে। আজ জেঠমলানীকে বোঝাতে আডবাণীকেই সুকৌশলে মধ্যস্থতা করানো হয়, যাতে আডবাণীর অনুগামী অন্য বিদ্রোহী নেতারাও ‘শান্ত’ থাকেন। তবে সঙ্ঘ সূত্র স্বীকার করছেন, এরমধ্যে মুরলী মনোহর জোশীকে বোঝাতেই সবথেকে বেশি বেগ পেতে হয়েছে। গডকড়ীর মেয়াদ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি গোঁ ধরে বসেছিলেন তিনিই।
সঙ্ঘ নেতাদের দাবি, গডকড়ীকে ফের সভাপতি করলে সুষমা স্বরাজের খুব বেশি আপত্তি নেই। তিনি বরং গত বেশ কয়েক মাস ধরে সঙ্ঘ নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে আসছেন। তবে অরুণ জেটলি এখনও ক্ষুব্ধ। সঙ্ঘ নেতা সুরেশ সোনিও চাইছিলেন, গডকড়ীকে সরিয়ে জেটলিকে সভাপতি করতে। কিন্তু ভাগবত সুকৌশলে সোনিকেই সঙ্ঘের মধ্যে দূরে সরিয়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। এরসঙ্গেই জেটলির আপত্তিকে উপেক্ষা করতে চান ভাগবত। |
|
|
|
|
|