আজি প্রণমি তোমারে...
স্বামীজিকেও কষ্ট দিয়েছে সংবাদপত্র, তুলনা দিলেন মমতা
ংবাদমাধ্যমের সমালোচনায় স্বামী বিবেকানন্দকেও কষ্ট পেতে হয়েছে স্বামীজির বসতবাড়িতে দাঁড়িয়ে শুক্রবার এই ভাবে নিজের খেদ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের ‘একাংশের ভূমিকা’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু দিন ধরে খুবই রুষ্ট। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে ইদানীং রীতিমতো কড়া ভাষায় তিনি এ সম্পর্কে তাঁর মত প্রকাশ করেন। এ দিনও একটু ঘুরপথে সেই প্রসঙ্গের অবতারণা করেন তিনি। যার মর্মার্থ, ‘ভাল কাজ’ করেও সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা থেকে তিনি রেহাই পাচ্ছেন না, যেমন পাননি স্বামী বিবেকানন্দ।
স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক ভিটেয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম এক কিশোরের।
উত্তর কলকাতার সিমলা পাড়ায় বিবেকানন্দের জন্মভিটে লাগোয়া পাঁচ কাঠা জমি এ দিন রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জমিটি কলকাতা পুরসভা নিয়ে রাজ্য সরকারকে দেয়। এর ফলে স্বামীজির বসতবাড়ির সঙ্গে গড়ে ওঠা গবেষণা কেন্দ্রটির আরও সম্প্রসারণ সম্ভব হবে। জমিখণ্ডের দলিল হাতে পেয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুহিতানন্দ বলেন, “বহু দিন পরে এমন এক জন মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছি, যিনি ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ওঁর সাহায্যে আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে।”
এর পরেই বলতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কাজ করতে গেলে কখনও কখনও সমালোচনা হতেই পারে। তা আমি পছন্দও করি। কিন্তু এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ভাল কাজেরও সমালোচনা করা হচ্ছে। কেউ কিছু করছে, তাকে টেনে নামাও।” মুখ্যমন্ত্রীর মতে, “মানুষের কাজ করতে গিয়ে অবশ্য স্বামীজিকেও প্রচারমাধ্যমের (প্রেস মিডিয়া) সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এর জন্য তিনি দুঃখ পেতেন। তবে বেঁচে থাকতেই তিনি মর্যাদা পেয়েছেন। সেটা আগে বিদেশি বন্ধুদের কাছে।”
মমতা বলেন, “আসলে আমাদের মধ্যে হিংসাটা একটু বেশি। কিন্তু তার তো কোনও ওষুধ নেই। চিন্তাধারাটা ভাল কাজে ব্যবহার করলে ভাল। এখানে তো সবেতেই আমিত্ব। আমি-আমি বেশি। আমি চাই না, আমি-ভিত্তিক কোনও কিছু কেউ করুক।”
স্বামী বিবেকানন্দকে যে তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য তখনকার বিভিন্ন পত্রপত্রিকার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল, তাতে কোনও ভুল নেই বলে জানিয়েছেন লেখক শংকর। তবে তিনি বলেন, “কোনও পত্রপত্রিকার সমালোচনা নিয়ে স্বামীজি কোনও দিন মাথা ঘামাননি। নিজে নীরব থাকতেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও লেখা নিয়ে প্রতিবাদ বা পাল্টা বিবৃতি তাঁর ধাতে ছিল না। বরং এ সব গায়ে না মেখে সকল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন তিনি।”
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুহিতানন্দকে মমতার প্রণাম। শুক্রবার।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও জানান, বাগবাজারের বোসপাড়া লেনে নিবেদিতার বাড়িটিও অল্প দিনের মধ্যেই রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “ওই বাড়িটি যাঁরা দখলে রেখেছিলেন, তাঁদের কাছে আমি নিজে গিয়েছিলাম। এক কোটি টাকা পর্যন্ত দাম দিতে রাজি ছিলাম। তাঁরা রাজি হননি। তাই পুরসভাকে বলি, বাড়িটি হাতে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে। সেই কাজ হয়ে গিয়েছে।” কলকাতা পুরসভার টাকায় স্বামীজির বাড়িমুখী দুই রাস্তা গিরিশ পার্ক ও মানিকতলায় দু’টি তোরণদ্বার তৈরি করে দেওয়া হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানমঞ্চে স্বামী পূর্ণাত্মানন্দের এই অনুরোধ তৎক্ষণাৎ কার্যকর করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

ছবি: সুমন বল্লভ
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.