বন্ধ ফ্ল্যাটে বৃদ্ধার পচাগলা দেহ, উত্তর নেই বহু প্রশ্নের
দিন তিনেক ধরে খোঁজ মিলছিল না ৭৬ বছরের বৃদ্ধার। দীর্ঘ দিনের পুরনো গাড়িচালক দু’দিন ধরে ফ্ল্যাটের সদর দরজায় তালা লাগানো দেখে ফিরে যাচ্ছিলেন। ওই বৃদ্ধার ফোনে একাধিক বার ফোন করেও আত্মীয়স্বজন বা গাড়িচালক যোগাযোগ করতে পারছিলেন না তাঁর সঙ্গে। সন্দেহ হওয়ায় বৃদ্ধার এক বোন শুক্রবার সকালে গড়িয়াহাট থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করেন। পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে, বিছানায় পড়ে রয়েছে ওই বৃদ্ধার পচাগলা দেহ।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ-দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “পাপড়ি মিত্র নামে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে তা জানা যাবে। তবে পাপড়িদেবীর দেহে আপাতদৃষ্টিতে আঘাতের কোনও চিহ্ন মেলেনি। ঘরের আলমারিতে অনেক সোনা ও দামি পাথর বসানো গয়নাও মিলেছে। বৃদ্ধার গলায় সোনার হারও অটুট।”
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পাপড়িদেবীর দেহ। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র
কিন্তু ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল কেন? কে বৃদ্ধার ফ্ল্যাটে তালা লাগিয়ে গিয়েছিল? কেনই বা তালা লাগানো হয়েছিল? শুক্রবার রাত পর্যন্ত সেই সব প্রশ্নের কোনও উত্তরই দিতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বিজন সেতুর কাছে ১৯৩ নম্বর রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের একটি বাড়িতে ভাড়া নেওয়া এক কামরার ফ্ল্যাটে বিধবা ও নিঃসন্তান পাপড়িদেবী থাকতেন। বছর ছয়েক আগে তাঁর স্বামী, পেশায় মেরিন ইঞ্জিনিয়ার রামকৃষ্ণ মিত্র মারা যান।
পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আরও জানান, সোমবার দুপুরে শেষ বারের মতো ওই বৃদ্ধাকে বাড়ির বাইরে বেরোতে দেখা যায়। তাঁর বহু দিনের পুরনো গাড়িচালক গোপাল চক্রবর্তী বুধ এবং বৃহস্পতিবার ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন, সদর দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগানো। তিনি ভেবেছিলেন, পাপড়িদেবী ট্র্যাঙ্গুলার পার্কে তাঁর খুড়তুতো বোন শ্যামলী ক্যুরিয়েনের বাড়িতে গিয়েছেন। মাঝেমধ্যে তিনি সেখানে যেতেন। এ দিন সকালেও গোপালবাবু দেখেন, ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। তখন তিনি শ্যামলীদেবীকে বিস্তারিত জানান। খবর দেওয়া হয় পাপড়িদেবীর ভাই, কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কিরীটি সেনগুপ্তকে। শ্যামলীদেবী গড়িয়াহাট থানায় দিদির নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এ দিন বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ ওই ফ্ল্যাটে যায় এবং বাড়ির নীচের সোনার দোকানের কর্মীকে নিয়ে গিয়ে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে। ঘরে সেই সময়ে আলো জ্বলছিল, টেলিভিশনও চলছিল। দেখা যায়, বিছানায় চিৎ হয়ে লেপ চাপা দিয়ে শুয়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। তাঁর দেহ পচেগলে গিয়েছে।
কিরীটিবাবু এ দিন জানান, তাঁর দিদি বয়সের তুলনায় যথেষ্টই সুস্থ ছিলেন। বাড়ির নীচে নেমে দোকানদারদের সঙ্গে গল্পগুজব করতেন। গাড়ি নিয়ে মাঝেমধ্যে দোকানবাজারও করতে যেতেন। তাঁর এক দাদাও ওই বাড়ির অন্য দিকের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। অসুস্থ থাকায় সেই দাদা পাপড়িদেবীর খোঁজখবর সম্প্রতি নিতে পারছিলেন না। শ্যামলীদেবী জানান, দিন দশেক আগে পাপড়িদেবী তাঁর বাড়ি যান। পরে বেশ ক’বার দিদির সঙ্গে তাঁর ফোনে কথাও হয়। কিন্তু গত সোমবার বিকেলের পর থেকে তাঁদের আর কথা হয়নি। পাপড়িদেবীর ফোন বেজে যায়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.