সদ্য প্রয়াত লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজকে স্মরণে রেখে আসানসোল বইমেলা শুরু হল শুক্রবার থেকে। চলবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই বছর আসানসোল বইমেলা ৩২ বছরে পা দিল। বুধা রেলওয়ে মাঠে (হাটন রোড) আয়োজিত ওই মেলার উদ্বোধন করেন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক বলেন, ‘মেলা মঞ্চে বেশি করে শিক্ষাবিদদের নিয়ে আসতে হবে। তাহলে মেলা আরও বেশি করে প্রসারিত হবে।”
এ দিন দুপুর একটা নাগাদ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকশিক্ষিকা, বুদ্ধিজীবী, কবি, শিল্পী সাহিত্যিকেরা বই পড়ার জনপ্রিয়তা বাড়াতে একটি মিছিল শুরু করেন। আসানসোলের পুরনো জিটি রোডের নজরুল মোড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়। শেষ হয় মেলাপ্রাঙ্গনে।
মেলা উদ্যোক্তারা জানান, এই মেলায় মোট ৭০টি বইয়ের স্টল রাখা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা এই মেলায় যোগ দিয়েছে। আয়োজক সংস্থার যুব শিল্পী সংসদের সভাপতি অশোক সামন্ত বলেন, “মেলা শুরু হয়েছিল ইস্টার্ন রেলওয়ে বয়েজ স্কুলের মাঠে। বছর ছয়েক আগে বুধা মাঠে সরিয়ে আনা হয়েছে মেলা। সেখানে জায়গা অনেকটা বড় হওয়ায় ক্রেতা এবং দর্শকদের স্বাচ্ছন্দ্য বেড়েছে। প্রতি বছর যেভাবে সাধারণ মানুষ মেলায় আসেন, তাতে আমরা উদ্বুদ্ধ।” |
‘বইয়ের জন্য’ মিছিলে পড়ুয়ারা। শুক্রবার সকালে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি। |
প্রথম থেকেই এই মেলায় আসছেন দোমহানির কবি শান্তিময় বন্দ্যোপাধ্যায়, চিত্তরঞ্জনের লেখক ও লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক বাসুদেব মণ্ডল প্রমুখ। তাঁরা জানান, এই মেলা বাৎসরিক যেন বাৎসরিক উৎসব। ইসমাইলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সরোজিনী সেনগুপ্ত জানাল, মেলার অপেক্ষায় সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে সে।
উদ্যোক্তাদের তরফে এ দিন জানানো হয়, শনিবার স্বামী বিবেকানন্দ স্মরণে একটি আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছে। পরে রয়েছে নৃত্যানুষ্ঠান। রবিবার সন্ধ্যায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মরণে একটি সভায় থাকবেন কবি উজ্জ্বল সিংহ, বিজয় সিংহ, সাহিত্যিক রাহুল দাশগুপ্ত ও অনাথবন্ধু চট্টোপাধ্যায়। আগামী ১৪ জানুয়ারি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে মানিকচাঁদ ঠাকুর গার্লস হাইস্কুল ও সুভাপল্লি বিদ্যানিকেতন স্কুলের পড়ুয়ারা। পরের দিন রয়েছে ইস্টার্ন রেলওয়ে হাইস্কুলের আবৃত্তি ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। ১৭ জানুয়ারি, বুধবার পণ্ডিত রবিশঙ্কর ও পণ্ডিত মানস চক্রবর্তীর স্মরণে গান গাইবেন ও সেতার বাজাবেন রাগেশ্রী দাস ও সৌম্যজিৎ পাল। পরের দিন থাকছে কবিদের কবিতা পাঠের আসর ও কবি অরুণ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে আলোচনাচক্র। পরের দু’দিনও রয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। শেষদিন, ২০ জানুয়ারি থাকবে কচিকাঁচাদের ‘বসে আঁকো’ প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যায় পুরস্কার বিতরণ হবে। এ দিনই বিএনআর গ্রাউন্ড ক্লাবের উদ্যোগে শুরু হয়েছে খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মেলা। শেষ হবে ২০ জানুয়ারি। |