পরাশকোল থেকেই ধরা পড়ে গেলেন কয়লা মাফিয়া বিজয় সিংহ। বৃহস্পতিবার সকালে তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলায় অভিযুক্ত এই কয়লা মাফিয়া ও তাঁর পাঁচ সঙ্গীকে রাতেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিপিএম নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, বিজয়কে ফাঁসানো হচ্ছে।
সে দিন সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার জন্য তৃণমূল কর্মীরা গাড়িতে ওঠার সময়ে সেখানে বোমা-গুলি নিয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে পরাশকোল কোলিয়ারির সিটু অনুমোদিত সংগঠনের সম্পাদক বিজয় ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনায় তাদের তিন জন জখম হন। সিপিএম অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা
আদালতে বিজয়।
নিজস্ব চিত্র। |
দাবি করে, তাদের পার্টি অফিসেই তৃণমূলের লোকজন হামলা করেছে। বিজয়-সহ কয়েক জনের বাড়ি ও দোকানে হামলার অভিযোগও ওঠে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছিল, বিজয়ের বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার পরে পলাতক থাকলেও রাতেই পুলিশ বিজয়কে গ্রেফতার করে।
ঘটনার পরে অবশ্য বিজয়ের পাশেই দাঁড়িয়েছেন নিয়ে অবশ্য রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছেই। পাণ্ডবেশ্বরের সিপিএম বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “অন্ডালের জামবাদ খোলামুখ খনির বর্ধিতকরণের কাজ ইসিএল বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে করানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সিটু এবং এআইটিইউসি-র নেতৃত্বে গ্রামবাসীদের আন্দোলনে কাজ শুরু করতে পারেনি। বাসিন্দারা আগে পুনর্বাসন ও এলাকা উন্নয়নের কাজ চেয়েছেন। এখন ইসিএল তৃণমূলের মদত নিয়ে সেই কাজ করতে চাইছে। তাই সিটু নেতা বিজয় সিংহ-সহ তিন সিটু নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হল।”
তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাসনের পাল্টা অভিযোগ, “অযৌক্তিক দাবি করে ওই এলাকায় অবৈধ খননে মদত দিচ্ছে সিটু। এর আগে বিজয় সিংহদের নেতৃত্বে সেখানে অবৈধ খনন হয়েছে। বারবার ধস-সহ নানা দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাসিন্দাদের ভুল বুঝিয়ে ফের বিপদ ডেকে আনতে চাইছে ওরা।” তাঁর দাবি, “এ ভাবেই জামুড়িয়ার বেলবাঁধে অবৈধ খনি থেকে কিছু দিন আগে ইসিএলের খনিতে আগুন লেগে যায়। সেখানেও সিপিএম আশ্রিত এক মাফিয়ার নেতৃত্বে খনন চলে।”
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের বক্তব্য, “ওই এলাকায় কাজ করতে রাজনৈতিক বাধা রয়েছে। আমরা প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছি। তবে কোনও রাজনৈতিক দলের সাহায্য চাইনি।” তিনি আরও বলেন, “ওখানে ‘ফায়ার জোনে’ (মাটির কাছাকাছি) ৯০ লক্ষ টন কয়লা রয়েছে। তা কেটে না নিলে আগুন লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।” |