শিবিরের উদ্যোগ ডাক্তারদের
ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত অমিল, দালালদের দৌরাত্ম্য কাটোয়ায়
ক্তাল্পতায় ভুগছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে গড়ে চার ইউনিট করে রক্ত থাকছে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা। আর এরই ফাঁকে মুনাফা লুঠছে দালালেরা। রোগীর আত্মীয়েরা দালালদের কাছ থেকে চড়া দামে রক্ত কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল ও শহরের নার্সিংহোমগুলি এই ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরে নির্ভরশীল। গড়ে প্রতি দিন ১৫ থেকে ২০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। সেখানে গত সাত দিনে গড়ে চার ইউনিট রক্ত মজুত ছিল। শনিবার হাসপাতালে কার্যত রক্তশূন্য অবস্থা হয়েছিল। এক দিকে কনকনে শীত। অন্য দিকে কলেজ ভোটের দামামা। এর ফলেই রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কমেছে বলে মনে করছেন প্রশাসন ও হাসপাতালের কর্তারা।

রবিবার কাটোয়া হাসপাতালে এমনই ছিল পরিস্থিতি। —নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সে দিনই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে দশ জন নার্সের বদলির দিন ছিল। অবস্থা এমনই হয় যে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ওই নার্সদের রক্তদানের জন্য অনুরোধ জানান। তাঁদের মধ্যে ছ’জন রক্তদান করেন। রবিবার ওই ছয় ইউনিট রক্তই পড়ে রয়েছে। হাসপাতালের উপরে কাটোয়া মহকুমা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী পূর্বস্থলী ব্লক, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম জেলার একাংশের মানুষ নির্ভরশীল। রক্ত না থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যা হচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসকেরাও ঝুঁকি নিতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে রোগীদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ বা অন্যত্র পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য রক্তদাতা নিয়ে যেতে হচ্ছে। রক্ত না জোগাড় করতে পারলে অন্যত্র যেতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছর খানেক কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে রক্তের সমস্যা না থাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য কম ছিল। গত সাত দিন ধরে রক্ত না থাকায় ওই সব দালালরা ফের ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে হাজির হয়ে গিয়েছে। রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বাবদ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দাবি করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দালালের বক্তব্য, “হাসপাতালে রোগী থাকলে আমরাও ৫০০ টাকা করে নিচ্ছি। নার্সিংহোমে রোগী থাকলে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা করে চাইছি।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চুপ করে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের ইন-চার্জ বাণীব্রত আচার্য বলেন, “বাড়ির লোকজন সেজে এসে দালালেরা রোগীকে রক্ত দেয়। তাই জেনে-বুঝেও আমরা দালালদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছি না।” কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি এক রোগীর আত্মীয় শ্রীমন্ত সাহা বলেন, “ডাক্তার চার ইউনিট বি-পজিটিভ রক্ত চেয়েছিলেন। ব্লাড ব্যাঙ্কে কোনও রক্ত না থাকায় দু’জন রক্তদাতা জোগাড় করেছিলাম। দু’জন দালালকে বাড়ির লোক সাজিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের কাছে রক্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।”
পরিস্থিতি ভয়াবহ দাঁড়াচ্ছে বুঝে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সুপারের কাছে গিয়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে বলেছেন। সেখানে চিকিৎসক থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, সবাইকে রক্ত দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগামী দু’এক দিনের মধ্যে কাটোয়া হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মীরা রক্তদান করবেন। এ ছাড়া ওই শিবিরে সর্ব স্তরের মানুষকেও উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.