|
|
|
|
ফিরে দেখার টানে প্রাক্তনীরা হাজির স্কুলে |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
হোক না রবিবার। অরিন্দম, অয়ন, কৌস্তুভদের স্কুলে যাওয়ার তাড়া খুব। দুপুর ১২টার মধ্যে স্কুলে পৌঁছতে হবে যে! অথচ দেরি হলে জরিমানা হবে এমন কোনও ভয় নেই। কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার ‘আশঙ্কা’ আছে। তাই প্রায় এক মাস হল শুধুমাত্র বন্ধুত্বের টানে রবিবার দুপুর হলে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল চত্বরে ভিড় করছেন প্রাক্তন ছাত্ররা। স্কুলে পৌঁছে কেউ বেঞ্চে বসার চেষ্টা করছেন। কেউ আবার ব্ল্যাকবোর্ড ছুঁয়ে দেখছেন। স্কুলের কড়িডরের সিড়িতে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটছে অনেকের। স্কুলের মাঠে দে ছুট। এমনই অনেক দৃশ্য রবিবারের জেলা স্কুল চত্বর জুড়ে। শতাব্দী প্রাচীন ওই সরকারি স্কুলে প্রাক্তন ছাত্রদের পুনর্মিলন উৎসব হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি। উদ্যোক্তা ‘স্কুল অ্যলুমনি অ্যাসোসিয়েশন’। উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা থাকা প্রাক্তন ছাত্রদের কাছে খবর পৌঁছে দিতে বেছে নেওয়া হয়েছে ফেসবুক। দু’মাস হয়েছে, সোস্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনে সাড়া দিয়ে রবিবার দুপুরে স্কুলে আসছেন অনেকে। ভিড় ক্রমশ বেড়ে চলেছে। আ্যলুমনি আ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম ভট্টাচার্য বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের জেলা বাস্তুকার। |
|
— নিজস্ব চিত্র। |
অরিন্দম বাবু বলেন, “এখন রবিবার স্কুল যাওয়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারি না। কত বন্ধু, দাদা, ভাইদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এই তো সেদিন প্রায় ত্রিশ বছর পরে দেখা হল এক প্রাণের বন্ধুর। অসাধারণ কাটছে দিনগুলি।” এক নামী সংস্থার আঞ্চলিক ম্যানেজার রাজকুমার বণিক। তিনিও বলেন, “ভাবতে পারিনি এ ভাবে আবার স্কুলে ফিরতে পারব। পুরনো বন্ধু, সেই ক্লাস ঘর, জলের কল। সব কিছুতে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। কিন্তু বেঞ্চগুলি দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়। বড় হয়েছি মনে হয়।” উৎসব যেন শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রাক্তন ছাত্ররা এতটাই আবেগ আপ্লুত যে উৎসবের পরেও প্রতিমাসে একটি রবিবার স্কুলে মিলিত হওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নে এগিয়ে আসার আবেদন রাখছেন তাঁরা। একটি আর্ন্তজাতিক আর্থিক সংস্থার ম্যানেজার, শিলিগুড়ির বাসিন্দা অয়ন রায়ের কথায়, “প্রতি রবিবার ছেলের প্রশ্নের উত্তরে বলছি স্কুলে যাচ্ছি। এটা বলতে কতটা ভাল লাগে বলে বোঝাতে পারব না। প্রায় একমাস ধরে শিলিগুড়ি থেকে প্রতি রবিবার জলপাইগুড়িতে যাচ্ছি। গত রবিবার এক চিকিৎসক বন্ধু কলকাতা থেকে এসেছিলেন। আগামী ২৭ জানুয়ারি আবার আসবে বলেছে। স্কুল ছাড়া এমন আবেগ অন্য কোথায় মিলবে!” |
|
|
|
|
|