|
|
|
|
মুক্তিপণের ফোনে খুন করার হুমকি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
টিউশন যাওয়ার পথে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুক্তিপণ না পেলে অপহৃতকে গুলি করে খুন করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পরেও পুলিশ ওই ছাত্রকে উদ্ধার করতে না পারায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনাটি মাটিগাড়া থানার পতিরামজোত এলাকার। পুলিশ জানায়, অপহৃত ছাত্রের নাম দীপঙ্কর সরকার। সে সিকিমের জোরথাং সিনিয়র সেকেন্ডারি হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। পতিরামজোতে তাঁদের আরেকটি বাড়ি রয়েছে। শীতের ছুটিতে সে এখানে এসে বাগডোগরার একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। শুক্রবার সেই সেন্টারে যাওয়ার পথেই অপহৃত হয় বলে অভিযোগ। ওই দিন দুপুরেই তাঁর মোবাইল থেকে দীপঙ্করের বাবা গোপালবাবুর কাছে ফোন করে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “একটি মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তাঁর মোবাইল সুইচ অফ রয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই তাঁকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, অপহৃতের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাঁর খোঁজ করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকালে তাঁর মোবাইলটি মাটিগাড়ার বারোঘরিয়া এলাকায় ছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওইদিন সন্ধ্যায় দীপঙ্করকে শিবমন্দিরে একটি চাউমিনের দোকানের সামনে দেখা যায়। সে একটি লজে গিয়েও ঘরের খোঁজ করছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু বছর ধরে গোপালবাবু স্ত্রী, ছেলেমেয়েকে নিয়ে জোরথাংয়ে বসবাস করছেন। গোপালবাবু জোরথাংয়ে একটি সোনার দোকানে কাজ করেন। পতিরামে তাঁর পৈতৃক বাড়ি রয়েছে। সেখানে তাঁর মা এবং চার ভাই থাকেন। বছরে একবার করে তিনি পরিবারের সকলে নিয়ে পতিরামের বাড়িতে আসতেন। গত ১ ডিসেম্বর তিনি সকলকে নিয়ে পতিরামজোতে আসেন। সেখানে সব ভাইরা মিলে পাঁচ বিঘে জমি (পৈতৃক সম্পত্তি) বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নেন।
গোপালবাবু বলেন, “আমি যে আয় করি তাতে আমার ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু সম্প্রতি জমি বিক্রি করে বেশ কিছু টাকা পেয়েছি। সেই টাকার দিকে কারও লক্ষ্য পড়েছে কি না কে জানে? যাই হোক আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই।” গোপালবাবু জানান, মার্চ পর্যন্ত জোরথাংয়ে দীপঙ্করের স্কুল বন্ধ থাকবে। সে জন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিনি বাগডোগরার একটি কোচিং সেন্টারে ছেলেকে ভর্তি করে দেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দীপঙ্কর টিউশন-এ যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরোয়। মাটিগাড়া হাসপাতালে মোড়ে একটি দোকানের পিছনে সে সাইকেল রেখে অটোয় বাগডোগরায় যেত। সে দিনও সাইকেলটি সেখানে রাখে দীপঙ্কর। তার পর থেকেই সে নিখোঁজ। এর পরে দপুর আড়াইটা নাগাদ দীপঙ্করের মোবাইল থেকেই এক ব্যক্তি ফোন করে তাঁর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে এ দিন গোপালবাবুকে জানায়। তার কাছে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে তারা। গোপালবাবু বলেন, “মুক্তিপণের টাকা না পেলে ছেলেকে গুলি করে খুন করে ফেলবে বলে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। তার পর থেকে মোবাইলটি সুইচড অফ রয়েছে।” |
|
|
|
|
|