|
|
|
|
কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন হয়রানি |
মামলা প্রত্যাহারে
চাপ দেওয়া হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদন |
|
|
যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত এক বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজারের পক্ষ থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযোগকারিণীর উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু, ওই বধূ পরিষ্কারই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নন।
রবিবার তিনি বলেন, “নানা ভাবে আমাকে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। তা আমি মানতে পারব না। অভিযুক্তের শাস্তি চাই।” ঘটনাচক্রে, অভিযুক্ত পরেশ ঘোষের স্ত্রী শিলিগুড়ি থানায় সাব ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত। তাই পুলিশের একাংশ ওই মামলা তোলাতে সক্রিয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ওই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। পুলিশের তরফে কেউ চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।” তিন দিন আগে ওই বধূ পুলিশকে জানান, তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে। শিলিগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি। পরেশবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সে দিনই তাঁকে আদালতে পুলিশ হাজির করায়। আদালতে তাঁর জামিনের আর্জি মঞ্জুর হয়। পরেশবাবুর তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, তিনি নির্দোষ। তা হলে চাপ দেওয়ার হচ্ছে কেন? পরেশবাবুর পরিবারের তরফে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে।
অভিযোগকারিণী জানান, ওই সংস্থার এক কর্মচারী শনিবার তাঁকে ফোন করে ডিসেম্বরের বেতন নেওয়ার জন্য ডাকেন। তখনই তাঁকে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়। ওই মহিলার অভিযোগ, “অভিযুক্তের নির্দেশেই ওই কর্মী আমাকে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেছেন। সে কথা ওই কর্মী আমাকে বলেছেন। আমি তা পুলিশ ও আমার আইনজীবীকে জানিয়েছি।” আজ, সোমবার তিনি বেতন নেওয়ার জন্য ফের অফিসে যাবেন বলে অভিযোগকারিণী জানান।
পুলিশের দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরই ওই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুধু একটি ঘটনা নয়, অভিযোগ উঠেছে, শিলিগুড়িতে নানা সরকারি ও বেসরাকরি সংস্থায় যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। শিলিগুড়ির বাইরে মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারেও বিভিন্ন সময়ে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তার দু-একটি ক্ষেত্রে থানায় অভিযোগ জমা হয়েছে। বহু ক্ষেত্রে সামাজিকতার কথা ভেবে মহিলা কর্মীরা বিষয়টি চেপে যাচ্ছেন। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের হেনস্থা সংক্রান্ত ব্যাপারে গঠিত প্রশাসনিক কমিটির বৈঠক কোচবিহারে নিয়মিত হয় না বলেও অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে নিয়ে ওই বিষয়ে সরকারি নির্দেশ মেনে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু কমিটির বৈঠক সে ভাবে হয় না। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ এলে বৈঠক করে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু গত এক বছরে তো কোনও অভিযোগ পাইনি।” উত্তর দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা ও দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী প্রায় একই সুরে জানিয়েছেন, তাঁরা ওই ধরনের কোনও অভিযোগ পাননি। এ ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি অনুজ শর্মা বলেন, “ওই ধরনের অভিযোগ এখনও আমার কাছে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেব। সে রকম হলে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা বলব।” |
|
|
|
|
|