রানাঘাটের নাসড়া হাই স্কুলের ঘর ও বারান্দার ছাদের প্লাস্টার খসে-খসে পড়ছে। যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক কোনও দুর্ঘটনা। কার্যত প্রাণ হাতে নিয়েই বিপজ্জনকভাবে ক্লাস করছে পড়ুয়ারা। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, সমস্যার কথা বার বার জানানো সত্ত্বেও তেমনই গা-ই করছে না বিদ্যালয় পরিদর্শক ও সর্বশিক্ষা মিশন।
অর্ধ শতকেরও বেশি পুরোনো এই স্কুলে প্রায় আড়াই হাজার ছাত্র-ছাত্রী পড়াশুনো করে। বিদ্যালয়ে চালূ রয়েছে বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের বিভাগও। কিন্তু ৮ বছর ধরে স্কুলের ভগ্নপ্রায় ছাদের কোনও সংস্কার না হওয়ায় বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে চলছে পঠন-পাঠন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ গোস্বামী বলেন, “পাঁচটি ঘরের ছাদের অবস্থা খুবই খারাপ। এছাড়াও শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় অনেক সময় বারান্দায় ক্লাস করাতে হয়। কিন্তু সেখানেও ছাদ খসে পড়ার অবস্থা। এ ব্যাপারে কারও কোনও হেলদোলই নেই। এক বার পরীক্ষা চলাকালীন ছাদের একাংশের প্লাস্টার খসে পড়লেও তেমন বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।” বিদ্যালয়ের জাতীয় সেবা প্রকল্পের আধিকারিক ও শিক্ষক বিভাস বনিক বলেন, “পড়ুয়ারা প্রচন্ড আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করছে। অনেক সময় ভয়ে একটা ক্লাস শেষ হওয়ার পর পড়ুয়ারা পরের ক্লাসে স্যার ঢোকার আগে পর্যন্ত বাইরে থাকছে। কিন্তু সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সকলেই নীরব। নেই কোনও সদিচ্ছাও।” বিদ্যালয়ের ছাত্র সৌরভ দাস বা রানা বিশ্বাসের বক্তব্য, “ক্লাস করার সময় খুব ভয় লাগে। মাঝেমাঝেই চোখ চলে যায় ছাদের দিকে। মনে হয় এই বুঝি মাথার ছাদ ভেঙে পড়ল।” তাদের কথায়, “এক বার প্রার্থনা চলাকালীন ভেঙে পড়ে ছাদের অংশ বিশেষ। কিন্তু ক্লাস ঘরে না থাকায় সে যাত্রায় রক্ষা পাই আমরা।”
কী ভাবছে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা সর্বশিক্ষা মিশন? বিদ্যালয় পরিদর্শক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্টভাবে এ বিষয়ে আবেদন জানালে আমরা তা আন্তরিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।” জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক অসীম কুমার বালা বলেন, “সমস্যার কথা জানি। আপাতত বিপজ্জনক ঘরগুলিকে ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার ওই স্কুল গিয়ে বিষয়টি দেখে এসেছেন। আশা করি দ্রুত শুরু হবে ভগ্নপ্রায় ছাদের সংস্কার।” কিন্তু কবে? সেই অপেক্ষাতেই প্রহর গুনছেন পড়ুয়া থেকে শিক্ষক সকলেই। |