ট্রেনের ধাক্কায় জখম হাতির খোঁজে বনকর্মীরা
ফের জঙ্গলে টুকরো বাইসন
তিনটি হাতির পরে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল বাইসনের। শনিবার গভীর রাতে ডুয়ার্সের চালসা এবং নাগরাকাটা স্টেশনের মাঝে চাপরামারি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রেললাইনের ধারে বাইসনটির দু’টুকরো দেহ মিলেছে। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, দেহ ও মাথা আলাদা হয়ে গিয়েছিল। জলপাইগুড়ির ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “বাইসনটির বয়স প্রায় ৬ বছর। পুরুষ। ট্রেনের ধাক্কা দু-খন্ড হয়ে গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।” প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে ডুয়ার্সের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া জঙ্গল ট্রেনের ধাক্কায় তিনটি হস্তিশাবকের মৃত্যু হয়। আরও অন্তত দু’টি হাতি জখম হয়েছে। তার মধ্যে একটি পুরুষ হাতির কোমরের হাড় ভেঙেছে। রেললাইনের ধারের জলায় পড়ে থাকা হাতিটিকে তুলে কুনকি হাতির পাহারায় চিকিৎসা করছে বন দফতর। অন্য আহত হাতিটির খোঁজ চলছে। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন দফতর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের পক্ষ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, “পুরো ঘটনাটি আমরা খতিয়ে দেখছি। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সরানো হচ্ছে জখম হাতিটিকে। ছবিটি তুলেছেন নারায়ণ দে।
রবিবার সকালে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন ঘটনাস্থল যান। জখম হাতিটিকে দেখার পরে বনকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। সেখানে কেন ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রোখা যাচ্ছেন না সেই প্রশ্নে সকলের মত নেন। বনমন্ত্রী বলেন, “ট্রেন-হাতির সংঘাত রুখতে হবে। শুধু আলোচনা করে লাভ নেই। আগে যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা রেল কর্তৃপক্ষ পুরো মানেননি। ফের তাঁদের বলা হবে। মুখ্যমন্ত্রীও উদ্বিগ্ন। তাঁকে রিপোর্ট পাঠাব। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে মধ্যে দিয়ে রাতে মালগাড়ি চালানো বন্ধ করাতে রেল কর্তৃপক্ষকে বলা হবে।” ঘটনাচক্রে, শনিবার তিনটি হাতির মৃত্যু হয় যাত্রিবাহী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায়। তা হলে রাতে মালগাড়ি চালানো বন্ধ করলে কী ভাবে হাতির মৃত্যু রোখা যাবে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা মেলেনি। বনমন্ত্রীর যুক্তি, “ওই যাত্রীবাহী এক্সপ্রেস ট্রেন দিনের বেলায় ডুয়ার্স দিয়ে যায়। ওই দিন অস্বাভাবিক দেরিতে চলছিল। রাতে মালগাড়ি বন্ধ হলে সন্ধ্যার মধ্যে যাত্রিবাহী ট্রেন ওই রুটে চলাচল করানোর ব্যবস্থা করতে পারবে রেল।” বছর দেড়েক আগে কেন্দ্রের পরিবেশ মন্ত্রক হাতি-ট্রেন সংঘাত রুখতে কিছু ব্যবস্থা নিতে দু’কোটি টাকা বরাদ্দ করে। তা দিয়ে লাইনের ধারে ওয়াচটাওয়ার ও আন্ডারপাস তৈরির কথা। সেই কাজ এগোচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বনমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রেলকে আগেও বলেছি। আবারও বলব, এনজেপি থেকে কোচবিহার হয়ে গুয়াহাটি রুটে মালগাড়ি চালাতে হবে। যাত্রিবাহী ট্রেনগুলি সূর্যাস্তের পরে ওই লাইনে ৪০ কিলোমিটারের কম গতিতে চালাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীও এই নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলবেন।”
আজ, সোমবার রাজাভাতখাওয়ায় রেল কর্তাদের সঙ্গে বনমন্ত্রী ও বনকর্তাদের বৈঠক হওয়ার কথা। উত্তরবঙ্গের বনপাল বিপিনকুমার সুদ জানান, আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে শিলিগুড়ি জংশন ব্রড গেজ লাইন চালু হয়েছে ২০০৪ সালে। তার পরে ডুয়ার্সে ট্রেনের ধাক্কায় প্রায় ৩৫টি হাতির মৃতু হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা ভাস্কর জেভি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ছটা বাইশ মিনিট নাগাদ ঝাঝা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দু’টি পুরুষ ও একটি মেয়ে হস্তি শাবক মারা যায়। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “প্রতিটি ঘটনার পরে বৈঠক হয়। কিছু সিদ্ধান্ত হয়। কাজের কাজ হয় না। সাধারণ মানুষকে সরব হতে হবে।” রাজাভাতখাওয়া বনবস্তির বাসিন্দা গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য জানান, তাঁরা আগামী দিনে বৈঠকে সামিল হওয়ার দাবিতে সরব হবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.