|
|
|
|
চুঙ্গা, চিতই, পুলি পিঠে ও বাউল গানে মাত শিলচর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
গত কয়েক বছর ব্যক্তিগত উদ্যোগে পৌষালি উৎসব দেখেছে এ শহর। পুরসভার উদ্যোগে এ বারই প্রথম তা পৌষমেলার রূপ পেল। দু’দিন ধরে শহর জুড়ে এক ভিন্ন উন্মাদনা। তরুণ-তরুণীদের ভিড় তো আছেই। হাজির বয়স্করাও। কোথাও খোঁজ চুঙ্গা পিঠের। গাঁধীবাগের কুয়াশাঘেরা সন্ধ্যায় ভাসছে বাউল গানের সুর। হালকা আঁচে হাত-পা সেঁকছেন কেউ।
গত ক’বছর পৌষালি উৎসবের আয়োজন করেছিলেন কুমারকান্তি দাস, শ্যামাপদ ভট্টাচার্যদের মতো কয়েক জন। পুরসভার উদ্যোগে প্রথম পৌষমেলার কথা শহরবাসীকে জানাতে শোভাযাত্রা বেরোয় শনিবার সকালে। বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন পুরনেত্রী ও বিধায়ক সুস্মিতা দেব। মেলায় এসে তিনি অভিভূত।
শিলচরেও পিঠে কিনতে এত ভিড় জমাবেন মানুষ, আন্দাজ করতে না-পারায় সন্ধ্যার আগেই সব পিঠে ফুরিয়ে যায়। বিবেকানন্দ রোডের রেখা সিংহ বললেন, সব চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে চুঙ্গা পিঠা। এটি বরাক উপত্যকার পুরোপুরি নিজস্ব। বাঁশের ভিতরে বিন্নি চাল-সহ অন্যান্য সামগ্রী ঢুকিয়ে বাঁশটি ঢিমে আঁচে পোড়ানো হয়। ঘুগনি, পঞ্জাবি খাবারের দোকানে ভিড় ছিল ভালই। তবু পুরনো দিনের পিঠে-পুলি জনপ্রিয়তা হারিয়ে যাচ্ছে বলে যাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের ধারণা পাল্টে যেতে পারে এই মেলায় এলে। বিস্মিত রেখা সিংহ জানালেন, যুবক-যুবতীরাই চুঙ্গা পিঠা বেশি কিনেছেন তাঁর দোকানে। সোনিয়া ধেনজাল শোনান, ‘এত সাড়া মিলবে ভাবতে পারিনি।’ পিঠে-পুলির দোকান দিয়ে খুশি শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, প্রাক্তন পুরপিতা শান্তনু দাসের স্ত্রী অরুন্ধতী দাসও। শনিবার পৌষমেলা দেখতে এসে পিঠে কিনতে না-পেরে নিজেই ছেলেমেয়েকে নিয়ে দোকান খুলে বসেছেন। বললেন, দু’ঘণ্টাতেই সব শেষ। পরে আবার বানিয়ে আনতে হয়েছে। পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, মালপোয়া।
মেলায় রয়েছে হস্তশিল্পের প্রদর্শনী ও বিক্রির আয়োজনও। জ্যোৎস্নারানি চক্রবর্তী, রীতা গোস্বামী, পিয়াসী সিংহ, চন্দ্রা রাজকুমারীরা এসেছেন হাতে তৈরি পাখা, পুতুল, টেবিল কভার ইত্যাদি নিয়ে। বিভিন্ন ধরনের কাঁথা এনেছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সব ছাপিয়ে পৌষমেলা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে বাউল গানে। বিকেলে অন্যান্য গান-বাজনা। কিন্তু সন্ধে নামতেই, মেলার মন বাউল গানে। |
|
|
|
|
|