|
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: শতবর্ষে বিজ্ঞান কংগ্রেস |
অগোছালো প্রদর্শনী নিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্য
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রদর্শনীতে ‘প্রতিযোগী’দের কাছে কয়েক গোল খেল পশ্চিমবঙ্গ। যার ফলে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে রাজ্যের ভাবমূর্তি ফের এক বার ধাক্কা খেতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
গত ৩ জানুয়ারি সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের শততম অধিবেশনের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই কেন্দ্রের কাছে অর্থ সাহায্যের দাবি করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রদর্শনীতেও রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কী রকম?
সল্টলেক স্টেডিয়াম চত্বরে বিরাট প্যাভিলিয়নে নানা রাজ্য ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থা স্টল দিয়েছে। নিজেদের কাজকে কী ভাবে তুলে ধরা যায়, তার চেষ্টা রয়েছে। রাজ্যগুলি তুলে ধরেছে নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধানের প্রচেষ্টাও। এ রাজ্য দু’টি দফতর (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং তথ্য-সংস্কৃতি) আলাদা আলাদা স্টল দিলেও বিজ্ঞানে নিজেদের অবদান খুবই কম তুলে ধরেছে। বরং বেশি তুলে ধরা হয়েছে বিবেকানন্দের সার্ধ্ব শতবর্ষকে। ওই চত্বরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দেওয়া বিবেকানন্দ সংক্রান্ত স্টলটি আকারে বেশ বড়। সুসজ্জিত ওই স্টলের ভিতরে নানা ধরনের পোস্টার ছাড়াও বই বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। আর তার পাশেই রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের দেওয়া ছোট একটি স্টল। তাতে আলাদা ভাবে জৈব প্রযুক্তি দফতরেরও জায়গা রয়েছে। তার ভিতরেও পোস্টার রয়েছে কিন্ত তা খাপছাড়া ভাবে। মূলত জৈব প্রযুক্তির কাজ ছাড়া পানীয় জল প্রকল্প, স্বাস্থ্য, ল্যান্ড ব্যাঙ্ক নিয়ে সরকারের নানা প্রকল্প তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু কেন সেই উদ্যোগ, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা নেই। বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রদর্শনীতে তথ্য প্রযুক্তি দফতর বিবেকান্দের সার্ধ্ব শতবর্ষের স্টল দিল কেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।
এখানেই টেক্কা দিয়ে গিয়েছে বাকি রাজ্যগুলি। কেরল যেমন পশ্চিমঘাট পর্বতের জীববৈচিত্র ও তা সংরক্ষণের কথা স্টলে তুলে ধরেছে। কেরল সরকারের কর্মীরা বলেছেন, ওই এলাকায় জীববৈচিত্র নষ্ট হয়ে যাওয়াটা রাজ্যের কাছে সমস্যার। বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে কী ভাবে তা রক্ষা করা যায়, সেটাই দেখাতে চেয়েছেন তাঁরা।
গুজরাতের কাছে যেমন বিপদ ভূকম্প প্রবণতা। তাদের গবেষণা কেন্দ্র ভূমিকম্পের সতর্কতা দেওয়ার ক্ষেত্রে কী ভাবে কাজ করছে, তা প্রচারে ছোট মাপের বই ছাপিয়ে বিলি করা হচ্ছে। তুলে ধরা হয়েছে আগামী দিনে রাজ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রকল্পের কথাও। ভূকম্প, হড়পা বান প্রভৃতির আগাম সতর্কতা ও বিপর্যস্ত এলাকা থেকে উদ্ধারের কাজে রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তিকে কী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা তুলে ধরেছে উত্তরাখণ্ড। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া প্রায় প্রত্যেকটি রাজ্যই তাদের স্টল আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
অন্য রাজ্যগুলি যেখানে এ ভাবে বিজ্ঞানকে তুলে ধরেছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের এই হাল কেন?
স্টলে বসে থাকা কর্মীরা অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে অন্যান্য স্টলের তুলনায় ভিড় যে কম হচ্ছে, সে ব্যাপারটি স্বীকার করে নিয়েছেন তারা। প্যাভিলিয়নে ঘুরতে আসা লোকজনের বক্তব্য, ভিন্ রাজ্যের স্টলগুলিতে কর্মীদের জনসংযোগে উৎসাহও অনেক বেশি। কোনও কিছু জানতে চাইলে সুন্দর করে ব্যাখ্যা করছেন ওই কর্মীরা। |