|
|
|
|
জখম ৯ |
ফার্নেস ফেটে মৃত্যু শ্রমিকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
কারখানার ইনডাকশন ফার্নেস ফেটে লোহা ছিটকে মৃত্যু হল এক ঠিকা শ্রমিকের। শনিবার গভীর রাতে দুর্গাপুরের লেনিন সরণির একটি বেসরকারি রোলিং মিল কারখানায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম রাজেশ মারিয়া (৩০)। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও ৯ জন। তাদের মধ্যে এক জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহতেরা হলেন শঙ্কর কুমার, গণেশ সাউ, সুশীল পাসোয়ান, শিউকুমার রাজভর, সঞ্জয় পান্ডে, নন্দলাল পাসোয়ান, সুকু কিসকু, সুরেশ কুমার ও শান্তনু কুমার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে ওই কারখানায় ইনডাকশন ফার্নেসে লোহা গলানো হচ্ছিল। পাশেই কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। রাত ১টা নাগাদ হঠাৎ ফার্নেস ফেটে যায়। কিছু বোঝার আগেই গরম লোহা ছিটকে এসে লাগে দশ জন ঠিকাশ্রমিকের গায়ে। কারখানা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফার্নেসও বন্ধ করে দেওয়া হয়। জখম শ্রমিকদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দু’জনকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। পথেই মৃত্যু হয় রাজেশের। |
|
এই কারখানাতেই দুর্ঘটনা।—নিজস্ব চিত্র। |
বার বার দুর্ঘটনার জেরে প্রশ্ন উঠছে কারখানাগুলির শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়ে। শ্রমিকদের অভিযোগ, সঠিক ভাবে নিরাপত্তা বিধি না মানার কারণেই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ৩০ ডিসেম্বরও দুর্গাপুরের কাঞ্জিলাল অ্যাভিনিউয়ের একটি বেসরকারি রোলিং মিল কারখানায় ফার্নেস ‘লিক’ করে লোহা ছিটকে জখম হন চার জন ঠিকাশ্রমিক। স্থানীয় একটি নাসির্ংহোমে চিকিৎসার পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আইএনটিটিইউসি নেতা তথা পুরসভার তৃণমল কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়াল এবং সিটু নেতা তথা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীদের অভিযোগ, বারবার দুর্ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ শ্রমিক নিরাপত্তা খতিয়ে দেখছেন না। আইএনটিটিইউসি’র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, উপযুক্ত নিরাপত্তা বিধি কার্যকরী করা, শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জামের বন্দোবস্ত করা এবং দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে।
তবে নিরাপত্তা নিয়ে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট কারখানাটির কর্ণধার অনিল জৈন। তাঁর যুক্তি, সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের পরেও কারখানায় এমন ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তাঁর কথায়, “দুর্ঘটনা ঘটলেই উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই কারখানায় যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, তাই চাই আমরা। শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কারখানা পরিদর্শক সৌম্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও গাফিলতি নজরে এলে তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|