|
|
|
|
তারাবাজি |
স্বর্ণমন্দিরে যাব বিয়ের পরেই
অন্তত পাঁচজন ডিজাইনার। কোয়েল-রানের বিয়ের পোশাক তৈরিতে তারা ব্যস্ত।
বিয়ের কার্ডে থাকছে রাধা-কৃষ্ণর ছবি। জানাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
কনের নাম ঐশ্বর্যা, বর অভিষেক বচ্চন। সময়টা ২০০৭ সাল। বহুচর্চিত সেই বলিউডি বিয়ের সময় ডিজাইনার শর্বরী দত্তের বুটিকে দেখা গিয়েছিল কনের মা বৃন্দা রাইকে। বিয়েতে শর্বরীর ডিজাইন করা পোশাক উপহার পেয়েছিলেন অভিষেক, স্ত্রীর বাড়ির তরফ থেকে। তা ছাড়াও অমিতাভের কুর্তা আর নিজের স্বামী এবং ছেলের জন্যও বেশ কিছু পোশাক কিনেছিলেন বৃন্দা রাই তাঁর কাছ থেকে।
কাট টু ২০১৩। সবার নজর এখন টলিউডের ‘বিগ ফ্যাট ওয়েডিং’-এর দিকে। পাত্র-পাত্রীর নাম নিসপাল সিংহ রানে আর কোয়েল মল্লিক। ডিজাইনার সেই শর্বরী দত্ত। বিয়ের রাতে পাত্রের পোশাকের দায়িত্ব তাঁর উপর।
পয়লা ফেব্রুয়ারির সন্ধে। বাঙালি মতে কোয়েলের বিয়ে। সেখানে যে লাল রঙের বেনারসিটি কোয়েল পরবেন, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হচ্ছে নিসপালের পোশাকটি। সুতরাং সেই পোশাক পছন্দ করা যে একদিনের কম্ম নয় তা তো বোঝাই যাচ্ছে। কোয়েল আর নিসপাল ইতিমধ্যেই শর্বরীর বাড়িতে বার চারেক এসে বিশেষ দিনটির পোশাক নিয়ে কথাবার্তা বলে গিয়েছেন।
অবশেষে দুজনেই নিসপালের জন্য ‘অঙ্গরাখা’ স্টাইলের একটি ব্রোকেড কুর্তা পছন্দ করেছেন। “কোয়েল চেয়েছিল এমন একটা ডিজাইন, যেটা ওর বেনারসির সঙ্গে মানানসই হবে। স্বাভাবিক ভাবেই বিয়ের রাতে তো কোয়েলের সাজ বেশ জমকালোই হবে। তাই রানেকেও এমন কিছু একটা পরতে হবে যেটা কিনা কনের সাজের সঙ্গে মানানসই হবে। নাহলে তো ওকে নিষ্প্রভ লাগতে পারে কোয়েলের পাশে,” বললেন শর্বরী। |
|
রানের দিদিও এ বিষয়ে এক মত ছিলেন। “ওরা শেরওয়ানি স্টাইলটা পছন্দ করেছিল। আমি সেটাকে ‘অঙ্গরাখা’তে বদলে দিয়েছি,” শর্বরী জানালেন। হালকা সোনালি ব্রোকেডের পোশাক। তার উপর মুঘল আমলের শিল্পের আদলে করা ফুলের নকশা। শর্বরীর পছন্দ ‘সারোভস্কি’-র ক্রিস্টাল। মেরুন রঙের সেই ক্রিস্টালও ব্যবহার করা হয়েছে।
রানের বিয়ের পোশাকের সঙ্গে থাকছে ‘রেডি টু ওয়ার’ তসরের ধুতি। “আমি অবশ্য একটা ডোগরি পাজামাও দিচ্ছি। আর এসবের সঙ্গে রয়েছে সোনালি মুজরি,” বললেন ডিজাইনার।
এরই মধ্যে, সকালবেলা গুরদোয়ার-এ বিয়ের সময় রানে পরছেন অভিষেক দত্তের ডিজাইন করা শেরওয়ানি। “আমি রানের শেরওয়ানিটা ডিজাইন করেছি। অফ-হোয়াইট রঙের উপর লাল রঙের কাজ করা হয়েছে। খুব অভিজাত দেখতে। এ ছাড়াও কিছু অ্যান্টিক জরি ব্যবহার করেছি,” অভিষেক বললেন।
একটা লাল পাগড়ি এবং তার সঙ্গে মানানসই একজোড়া মোজরিও অভিষেক ডিজাইন করছেন এই বিশেষ অনুষ্ঠানটির জন্য।
‘রিসেপশন’-এর দিন রানে পরছেন শান্তনু গোয়েনকার পোশাক। “ওইদিন আমার ডিজাইন করা একটা ‘আচকান’ পরছেন রানে। আচকান’টি কালো ভেলভেটের তৈরি। তার সঙ্গে রয়েছে ‘ড্রেপড ট্রাউজার’ আর এমব্রয়ডারি করা জুতো,” বললেন শান্তনু।
বিয়ের আগে আরও একটা অনুষ্ঠান রয়েছে ৩১ তারিখে। “ওখানেই আংটি-বদল হবে। তার সঙ্গে আছে সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। তবে এটা একটা খুব ইনফর্মাল সঙ্গীত,” বললেন রানে। |
শর্বরীর ‘অঙ্গরাখা’ |
অভিষেকের ‘শেরওয়ানি’ |
|
|
বিয়ের রাতের জন্য
কোয়েল ও রানের পছন্দ
আমার ডিজাইন করা ‘অঙ্গরাখা’
শর্বরী দত্ত |
গুরদোয়ার-এ বিয়ের সময়
রানে পরছেন আমার ডিজাইন
করা অফ-হোয়াইট শেরওয়ানি
অভিষেক দত্ত |
|
এ দিকে বিয়ের দিন সকালে কোয়েল পরছেন একটা লাল-সাদা কম্বিনেশনের সালোয়ার কামিজ। দোসরা ফেব্রুয়ারি রিসেপশনের রাতে পরছেন গোলাপি লহেঙ্গা। দুটোই সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ডিজাইন করা। বিয়ের রাতে লাল বেনারসি। “কোয়েলের জন্য বিশেষ ভাবে ডাই করানো হয়েছে বেনারসি ফেব্রিকের একটা শাড়ি। তার উপর রেশম, জারদৌসি আর স্টোনের এমব্রয়ডারি। শাড়ির পাড় আর আঁচল জুড়ে,” বললেন ডিজাইনার শায়ন মিত্র। আরও জানালেন, “ব্লাউজটা সিল্কের। কোনও ঘটি হাতা নেই তাতে। কিন্তু ফিটিংটা খুব সুন্দর। যেহেতু শাড়িতে অনেক লাল আর মেহেন্দি রঙের কাজ থাকছে, তাই গয়নাগুলোতেও সেই রঙের ছোয়া তো থাকবেই। হয়তো রুবি আর পান্নাও থাকতে পারে। তবে কোনও চকচকে সোনালি গয়না নয়। সব ‘অ্যান্টিক গোল্ড’।”
ইতিমধ্যে কোয়েলের নিজের কার্ড পছন্দ করা হয়ে গেছে। “কলকাতাতে একটা কার্ডের বুটিক রয়েছে। সেখান থেকেই পছন্দ করেছি আমার বিয়ের কার্ড,” কোয়েল বললেন। রাধা-কৃষ্ণের ছবি রয়েছে কার্ড-এ। কারণ? কোয়েলের নিজের রাধা-কৃষ্ণের মোটিফটা খুব পছন্দের।
বিয়ের পরে এক মাস ছুটি। তার মধ্যেই ইচ্ছা আছে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে যাওয়ার। “আমি কোনও দিন ওখানে যাইনি। তাই এ বার ইচ্ছা আছে বিয়ের পর রানের সঙ্গে ওখানে যাওয়ার,” কোয়েল বললেন।
অবশ্য সব কিছুই সেরে ফেলতে হবে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই। কারণ মার্চ মাস থেকেই আবার যে ‘লাইটস-ক্যামেরা-অ্যাকশন’ শুরু! যদিও অনেক অফার রয়েছে, শোনা যাচ্ছে হয়তো স্বামীর প্রযোজনায় কোয়েল ফিরছেন টলিউডের পর্দায়। |
|
|
|
|
|