এক চাষির দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকালে রায়গঞ্জ থানার বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের বসমনপাড়া এলাকায় রাস্তার ধার থেকে ওই দেহটি উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম নির্মল বর্মন (৩০)। তাঁর বাড়ি ইটাহার থানার দুর্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেতোর এলাকায়। মৃতের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ওই যুবক নিখোঁজ ছিলেন। দেহ উদ্ধার হলেও তাঁর বাইক ও মোবাইল ফোনের খোঁজ মেলেনি।
ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, বৃহস্পতিবার বিকালে খেতের কাজ সেরে নির্মলবাবু নিজের বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বার হন। বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের শাকদুয়াহাট এলাকায় যাত্রাগান দেখতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন কিনা সেই বিষয়ে কোনও তথ্য মেলেনি। কিছুদিন আগে ওই যুবক স্থানীয় এক যুবকের কাছ থেকে টাকা ধার নেয় বলে পুলিশ জেনেছে। সেই টাকা পয়সা নিয়ে গোলমালের জেরে দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, যাত্রার অনুষ্ঠানে জুয়ার আসরে কোনও গোলমাল অথবা বাইক ছিনতাইয়ে বাধা দিতে গিয়ে তিনি খুন হয়েছেন কিনা সেটাও দেখছে পুলিশ। রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামানিক বলেন, “টাকা লেনদেন নিয়ে গোলমালের জেরে ওই যুবক খুন হতে পারে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” নির্মলবাবুর স্ত্রী ছাড়াও দু’বছর বয়সী এক ছেলে ও দু’মাস বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। মৃতের শ্যালক নরেশ বর্মন বলেন, “জামাইবাবু কেন খুন হলেন বুঝতে পারছি না।” এদিনের ঘটনা নিয়ে গত দুই মাসে রায়গঞ্জ থানা এলাকায় পাঁচটি খুনের ঘটনা ঘটল। এ দিন চাষি খুনের ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। উত্তর দিনাজপুর জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে। পুলিশের উপরে মানুষ আর ভরসা রাখতে পারছে না। জেলা বামফ্রন্টের তরফে সই সংগ্রহ করে রাজ্যপালের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “বাসিন্দারা আতঙ্কিত। দলের তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি ও রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশকে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা অবশ্য দাবি করেন, বেশিরভাগ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ আইন মেনে কাজ করছে। আতঙ্কের কিছু নেই। |