কোচবিহার জেলায় বিভিন্ন সরকারি দফতর-সহ সাধারণ গ্রাহকদের কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি টাকা। ওই বকেয়া বিল জমা দেওয়ার জন্য মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি দফতর ও গ্রাহকদের কাছে নোটিস পাঠানোর কাজও শুরু করেছে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি। সংস্থার কোচবিহারের ডিভিশনাল ম্যানেজার বিষ্ণু দত্ত বলেন, “সরকারি ও বেসরকারি গ্রাহকদের কাছে বকেয়া থাকা বিলের টাকা উদ্ধারের অভিযান শুরু হয়েছে। মাইকে প্রচারের পাশাপাশি প্রত্যেককে নোটিসও পাঠানো হচ্ছে।”
বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি সূত্রে জানা গিয়েছে, বকেয়া বিলের বেশিরভাগ পুরসভা সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের। কোচবিহার পুরসভার কাছে বকেয়া পড়ে আছে ৪ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা। পুলিশ বিভাগের কাছে পাওনা দাঁড়িয়েছে ৫৩ লক্ষ টাকা। স্বাস্থ্য দফতর, এগ্রি মেকানিক, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাছে বকেয়া যথাক্রমে ২১ লক্ষ, ৬৮ লক্ষ এবং ২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বাকি টাকা সাধারণ গ্রাহকদের কাছে বকেয়া পড়ে আছে। বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্তারা জানান, মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি ব্লক ছাড়া জেলার বাকি ১০টি ব্লক বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কোচবিহার ডিভিসনের আওতায় রয়েছে। সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সাধারণ বাসিন্দা মিলিয়ে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ। তারমধ্যে সরকারি দফতরগুলিতে বিল বকেয়া পড়ে আছে এক থেকে পাঁচ বছর সময়। প্রতি মাসে মোট বিলের আংশিক টাকা মেটানো হচ্ছে। তাই বকেয়ার পরিমাণ বেড়েছে। কয়েকবার তাগাদা দিয়েও লাভ না হওয়ায় এ বার প্রচারে নামে বিদ্যুৎ পর্ষদ। পুরসভা কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কথা অস্বীকার করেননি। তাঁরা জানান, চার বছর আগে পরিষেবা সংক্রান্ত বিল মেটানোর ব্যাপারে কলকাতায় পুরসভা ও বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। এর পরে আবাসন সহ অন্যান্য লাভজনক ক্ষেত্রের বিল মেটানো হলেও পথবাতির মত পরিষেবা খাতের বিল বকেয়া রাখা হয়। পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডু বলেন, “চার বছর আগে পথবাতির মত পরিষেবার বিল নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। তখন দুই দফতরের উর্ধ্বতন কর্তারা দ্বিপাক্ষিক ভাবে সমস্যা মিটিয়ে নেবেন বলে ঠিক হয়। এর পরে আমরা শুধু আবাসনের মত কমার্শিয়াল সংযোগের বিল মেটাচ্ছি।” কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানিকলাল দাস বলেন, “বিভিন্ন হাসপাতাল ও অফিসে পৃথক পৃথক সংযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে কিছু বকেয়া রয়েছে বলে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির তরফে জানানো হয়েছে। আমরা হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে কমার্শিয়াল হারে বিল করার বিষয়ে আপত্তির জানিয়েছি।” |