নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সিপিএম রাজ্যের ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির সর্বাত্মক বিরোধিতা করবে বলে জানিয়ে দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শুক্রবার বুদ্ধবাবু বলেন, “রাজ্যের লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ লাভের আশায় এই সব চিটফান্ডে টাকা রাখছেন। আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ, সেই টাকা তাঁরা কখনওই ফেরত পাবেন না। আমরা এই অবস্থা মেনে নিতে পারি না।”
মানুষকে সচেতন করতে সিপিএম প্রচারে নামবে বলে জানান বুদ্ধবাবু। তিনি বলেন, “সরকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কিন্তু আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। সময় এসেছে এর সর্বাত্মক বিরোধিতা করার।” কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলে দলীয় মুখপত্রের ৪৭তম বর্ষপূর্তির ওই সভায় বুদ্ধবাবু ছাড়াও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বক্তৃতা করেন। |
গণশক্তির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং বিমান বসু। —নিজস্ব চিত্র |
ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে সরব প্রদেশ কংগ্রেসও। মানস ভুঁইয়ার অভিযোগ, মানুষ এই সব সংস্থায় টাকা রাখায় স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প ধাক্কা খেয়েছে। একই কথা বলেন বুদ্ধবাবুও। সরকার সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পাল্টা দাবি, এই সংস্থাগুলির অধিকাংশই সৃষ্টি বাম আমলে। কিন্তু বাম সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
এ দিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন, তাঁদের আমলেই এই ধরনের সংস্থা গজিয়ে ওঠা শুরু হয়। কিন্তু তাঁরা পদক্ষেপ করেছিলেন। বুদ্ধবাবু বলেন, “তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত বিধানসভায় বিল আনেন। সেই বিল রাষ্ট্রপতির সইয়ের জন্য দিল্লিতে পাঠানো হয়। তা পড়ে আছে।” তৃণমূল এই নিয়ে তৎপরতা দেখায়নি, অভিযোগ করে বুদ্ধবাবু বলেন, “সম্প্রতি আমাদের দলের সাংসদরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, অবিলম্বে এই ধরনের সংস্থা বন্ধ করুন, নয়তো লক্ষ লক্ষ গরিব সর্বস্বান্ত হবেন।” বুদ্ধবাবুর দাবি, “কলেজের শিক্ষক (অম্বিকেশ মহাপাত্র), ছাত্রী বা গ্রামের কৃষকও (শিলাদিত্য চৌধুরী) সমালোচনা করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।... বিচার বিভাগ বা মানবাধিকার কমিশন মুখ খুলতে চাইলে তাদেরও ধমকে চুপ করানো হচ্ছে।” বাম আমলে তৃণমূল যে দলতন্ত্রের অভিযোগ তুলত, সেই প্রসঙ্গ টেনে বিমানবাবু বলেন, “ওরা কি গণতন্ত্র করছে?” |