দলীয় সভায় যাওয়ার পথে এবং সভার প্রচারে বেরনো সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ঘটনাগুলি ঘটেছে বীরভূম ও উত্তর ২৪ পরগনায়। এ দিনই হুগলির হরিপালে বিজেপি-র সভাতেও হামলা চালানোয় অভিযুক্ত তৃণমূল। তবে অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতারা।
বীরভূমের লাভপুরের হাটতলা হাইস্কুল ময়দানে এ দিন জনসভা করেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। সিপিএমের বোলপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক উৎপল রুদ্রের অভিযোগ, সিয়ানে তৃণমূলের বোমাবাজির জেরে ওই এলাকা থেকে তাঁদের কর্মীরা সভায় আসতে পারেননি। দলের বোলপুর জোনাল কমিটির এক সদস্যকে মারধর করে অপহরণের চেষ্টা করে হামলাকারীরা। ভাঙচুর চলে কৃষকসভার বোলপুর ব্লক সভাপতির বাড়িতে। পুলিশকে আগাম গোলমালের আশঙ্কার কথা জানানো হলেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি বলে তাঁর ক্ষোভ। ঘটনার প্রতিবাদে বোলপুর-নানুর রাস্তা ঘণ্টা খানেক অবরোধ করে সিপিএম। |
বোলপুর-নানুর রাস্তায় সিপিএমের অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র |
সভায় সূর্যকান্তবাবু বলেন, “তৃণমূল সন্ত্রাস-সন্ত্রাস করে গলা ফাটাচ্ছে। আবার ওরাই সন্ত্রাস করছে। যেখানেই জনসভা হোক না কেন, পথে মানুষকে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল।” দিন কয়েক আগে হুগলির পোলবাতেও সূর্যকান্তবাবুর সভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে সিপিএম কর্মীদের গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর পাল্টা অভিযোগ, “জনসভার পথে সিপিএমের লোকই আমাদের আক্রমণ করে। দুই সমর্থকের বাড়িতে বোমাবাজি হয়। এক যুব নেতা আহত হন।” তবে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি কোনও পক্ষই।
ঘোলা থানার নিউ ব্যারাকপুরে এ দিনই সূর্যকান্ত মিশ্রের সভার প্রচারে বেরিয়ে প্রহৃত হয়েছেন বাবু গুহ নামে সিপিএমের স্থানীয় লোকাল কমিটির এক সদস্য। নিউ ব্যারাকপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ জানান তিনি। বিক্ষোভ হয় ফাঁড়ির সামনে। বারাসত ১ ব্লকের ছোটজাগুলিয়ায় এ দিন সভা করেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। সেখানে যাওয়ার পথে বরা এলাকায় ম্যাটাডর থামিয়ে সিপিএম সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেলিম বলেন, “পরিকল্পিত ভাবেই হামলা-মারধর করেছে তৃণমূল।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষের বক্তব্য, “ছোট জাগুলিয়ায় সিপিএমের কিছু দুষ্কৃতী আমাদের দলের পতাকা ছেঁড়ায় সমর্থকেরা বাধা দেন। অন্য ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের সম্পর্ক নেই।”
হুগলির হরিপালের জরুটি মোড়ে এ দিন বিজেপির সভায় হামলা চালানোর ঘটনাতেও জড়িয়েছে তৃণমূলের নাম। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের দাবি, হামলাকারীদের হাতে ‘লাঞ্ছিত’ হন দলের রাজ্য সম্পাদিকা রাজকুমারি কেশরী। রাহুলবাবুর কথায়, “তৃণমূলের শাসনে রাজ্যে মহিলাদের উপরে নির্যাতন-সম্মানহানির ঘটনা ঘটছে।” বিজেপি-র ক্ষোভ, পুলিশের সামনেই হামলা হয়েছে। দলের তরফে পরে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানেনি পুলিশ। পক্ষান্তরে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সমীরণ মিত্র বলেন, “বিজেপি নেতারা মুখ্যমন্ত্রীর নামে লাগাতার কটূক্তি করছিলেন। সাধারণ মানুষই তার প্রতিবাদ করেন।” |