রাজনীতিমুক্ত শিক্ষার ডাক দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষাকে রাজনীতিমুক্ত করার ডাক দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দূর-শিক্ষার মাধ্যমে বৃত্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে শুক্রবার ঝাড়গ্রামে কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের মাঠে একটি কর্মশালা হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্তরের এই কর্মশালার উদ্বোধনে এসে ব্রাত্যবাবু বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্রে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি চলবে না। যাঁরা শিক্ষক সংগঠন করেন, তাঁরা পুরনো ইতিহাস ভুলে যান। আমাদের রাজনীতির সমর্থক সংগঠন করেন যাঁরা, তাঁদেরও বলছি, আপনাদের যা দাবি দাওয়া আছে তা মুখ্যমন্ত্রী ও আমাকে জানান। কিন্তু, সংগঠনের নামে ক্লাস ফাঁকি দেওয়া যাবে না।” তিনি আরও বলেন, “ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয় তেমনই ভুল শিক্ষার ফলে জাতির ধ্বংসের পথ প্রশস্ত হয়।”
পূর্ব মেদিনীপুরেও প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়ে এই সংক্রান্ত কর্মশালা হয় এ দিন। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উপনগরীর একটি মাঠে আয়োজিত এই কর্মশালাটিতেও এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন জেলার প্রায় সাড়ে চার হাজার প্রাথমিক শিক্ষক।
ঝাড়গ্রামে আয়োজিত এ দিনের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মুর্মু, তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, তৃণমূল শিক্ষা সেলের রাজ্য সভাপতি শ্যাম পাত্র প্রমুখ।
ঝাড়গ্রামের কর্মশালায় শিক্ষামন্ত্রী।
জেলার সাত হাজারেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা হাজির ছিলেন এই কর্মশালায়। কর্মশালার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে ব্রাত্যবাবুর দাবি, “শিক্ষার অধিকার আইন চালু হওয়ার পর রাজ্যের আগের সরকার এনসিটিই-র (ন্যাশন্যাল কাউন্সিল অফ টিচার্স এডুকেশন) নীতি মেনে যথাযথ পদক্ষেপ করেন নি। যে কারণে ২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে নিয়োগ হওয়া রাজ্যের ৭৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হতে বসেছিল। তড়িৎ গতিতে আমরা রাজ্য শিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেছি। এই বৃত্তিগত প্রশিক্ষণকে এনসিটিই সবুজ সংকেত দেওয়ায় বিপুল সংখ্যক কর্মরত ওই শিক্ষক-শিক্ষিকার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা সম্ভব হয়েছে।” দু’বছরের মধ্যে ওই শিক্ষকেরা শংসাপত্র পাবেন বলে আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী।
পরে সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে ব্রাত্যবাবু বলেন, “আমি শুনেছি ঝাড়গ্রাম মহকুমায় এখনও ৮০ ভাগ মানুষ নিরক্ষর। এটা একদিনে হয় নি। প্রাথমিক শিক্ষাই এই নিরক্ষরতার অভিশাপ দূর করতে পারে।” শিক্ষামন্ত্রী জানান, জঙ্গলমহলে শিক্ষার উন্নয়নে ৩টি সরকারি কলেজ তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। ১৮টি মডেল স্কুল তৈরি হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে একাধিক হস্টেল। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য জানান, যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকার এক বছরের বৃত্তিগত প্রশিক্ষণ নেওয়া আছে, তাঁরা এক বছরের ব্রিজ কোর্স করবেন। যাঁদের কোনও প্রশিক্ষণই নেই, তাঁদের দু’বছরের ডি এল এড কোর্স (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টরি এডুকেশন) করতে হবে।
এ দিন কর্মশালা চলাকালীন দুপুরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লাঞ্চ-প্যাকেট বিলি নিয়ে তুমুল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। হুড়োহড়িতে জখম হন এক শিক্ষক। তাঁকে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকেল পর্যন্ত অনেকেই খাবার না-পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি ও গালিগালাজ শুরু করেন। অশান্তির জেরে কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বটি কিছুটা ব্যহত হয়। কর্মশালার জন্য এদিন কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন ছুটি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু এ দিন স্কুল প্রাঙ্গণ আবর্জনা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় তা পরিষ্কারের জন্য শনিবারও স্কুল ছুটি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.