|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা |
বিবেকানন্দ পার্ক |
সঙ্কটে সৌন্দর্যায়ন |
কৌশিক ঘোষ |
সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হল, অথচ, জবরদখলকারীদের সরানো হল না!
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জবরদখলকারীদের রেখেই দক্ষিণ কলকাতার বিবেকানন্দ পার্কে সৌন্দর্যায়নের কাজ চালানো হবে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এই পরিকল্পনা কতটা সফল হবে?
কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) সিইও বিবেক ভরদ্বাজ বলেন, “আমরা নিরুপায়। কারণ, এই জবরদখলকারীদের সরানোর ব্যাপারে কোনও বিকল্প জায়গা পাওয়া যায়নি। মাঠের একটি অংশে জবরদখলকারীরা রয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ওই মাঠের সংস্কার বা সৌন্দর্যায়নে আরও দেরি করলে পুরো মাঠটি বেদখল হয়ে যেত। আপাতত তাঁদের রেখেই এই কাজ চলবে। পরে জায়গা পেলে পুনর্বাসনের বিষয়টি ভাবা হবে।”
সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের পাশে রবীন্দ্র সরোবরের উল্টো দিকে বিবেকানন্দ পার্ক শহরের অন্যতম বড় পার্ক হিসেবে চিহ্নিত। ওই পার্ক কলকাতা উন্নয়ন সংস্থার (কেআইটি) অধীনস্থ। আবার কেএমডিএ-র অধীন কেআইটি। বিবেকানন্দ পার্কের ফাঁকা অংশে অনেক দিন ধরেই বহিরাগতেরা বসবাস শুরু করেছেন। এমনকী, ফাঁকা জায়গায় তাঁরা নির্মাণ কাজও করেন। পার্কের ভিতরে ছাড়া বাইরেও বেআইনি ভাবে দোকানপাট গড়ে উঠেছে।
|
|
কেআইটি-র এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প গ্রহণ করার পরে বিবেকানন্দ পার্কে সৌন্দর্যায়নের প্রকল্প গ্রহণ করে এই সংস্থা। সংস্থা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, রবীন্দ্র সরোবর সংস্কার করা হলে ওই পার্কটিরও সংস্কার করা প্রয়োজন। তা না হলে ওই এলাকার সামগ্রিক সৌন্দর্যায়নের ক্ষেত্রে ভাটা পড়বে। আগে ওই পার্কের সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়নের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হলেও অর্থাভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। ওই পার্কে খেলার জন্য কয়েকটি ক্লাবকে ভাড়া দেওয়া আছে। তবে ওই মাঠের একাংশ কী করে জবরদখল হল, সে ব্যাপারে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
বিবেকানন্দ পার্কের সৌন্দর্যায়নের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার ওই পার্কের জন্য মোট দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ওই অর্থের মধ্যে প্রথম লপ্তে ৬০ লক্ষ টাকার কাজ শুরু হয়েছে। এই পর্যায়ে পার্কের চার দিকে বেড়া দেওয়া, মাটি এবং ঘাস দিয়ে পার্কের জমির সংস্কার করা এবং আলোকস্তম্ভ বসানোর কাজ চলছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, পার্কের ভিতরকার রাস্তা সারানো, গাছ বসানো ও নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পার্কের যে অংশটিতে জবরদখলকারীরা রয়েছেন সেই অংশটি ঘিরে রাখা হবে। পরবর্তীকালে, কোনও বিকল্প জায়গায় তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার পরে ঘেরা অংশটির সংস্কার হবে বলে কেআইটি-র আধিকারিকেরা জানান। |
|
এলাকার বাসিন্দা সুধাংশু দাস জানান, এই পার্কটি দক্ষিণ কলকাতার এক অন্যতম ঐতিহ্যশালী জায়গা। কিন্তু জবরদখলকারীদের জন্য নানা সমস্যা হয়। এমনকী, কোনও কোনও সময়ে পার্ক সংলগ্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলারও অবনতি হয়। অন্য দিকে, কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে জবরদখলকারীদের পুনর্বাসনের জন্য তাঁদের কোনও প্রকল্প নেই। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, এই পার্কে জবরদখলের সমস্যা রয়েছে। তবে পুরসভার বিএসইউপি (বেসিক সার্ভিসেস ফর আর্বান পুওর) প্রকল্পে পুনর্বাসনের জন্য কোনও জায়গা এই অঞ্চলে নেই। জায়গার অভাবেই তা করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্য কোনও জায়গায় তাঁদের পুনর্বাসনের বিষয়েও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
|
ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী |
|
|
|
|
|