|
|
|
|
|
|
উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর |
টালা পাম্পিং স্টেশন |
প্রশ্ন সুরক্ষায় |
কৌশিক ঘোষ |
নিরাপত্তার কথা ভেবে টালা পাম্পিং স্টেশন চত্বর থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। টালা পাম্পিং স্টেশন সংরক্ষিত স্থান হিসেবে চিহ্নিত। কিন্তু এই চত্বরেই চলছে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রতি দিনই চিকিত্সার জন্য অনেকে আসেন। পুরকর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, এতে টালা পাম্পিং স্টেশনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই কেন্দ্রটি স্থানান্তরিত করার কথা ভাবা হয়েছে। কিন্তু পাম্পিং স্টেশন চত্বরেই রয়েছে শ্রমিক আবাসন। প্রশ্ন উঠেছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সমস্যা হলে আবাসনটি কি সেই সমস্যা তৈরি করছে না?
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “টালা পাম্পিং স্টেশন চত্বরের নিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি। আবাসিকেরা নিরাপত্তার নিয়ম মেনে থাকেন। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। বামফ্রন্টের আমলে এখানে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল। আমি আসার পরেই এখান থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সরানোর চেষ্টা করেছিলাম। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য বিকল্প জায়গা পেয়েছি। কাজও শেষ।” |
|
নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র |
পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “নিরাপত্তার কথা ভেবেই টালা পাম্পিং স্টেশন চত্বর থেকে অন্য জায়গায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টালা পাম্পিং স্টেশনের কাছেই পুরসভার জমিতে নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরসভা ও কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে।”
টালা পাম্পিং স্টেশনে কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে?
পুরসভা সূত্রে খবর, পাম্পিং স্টেশন জুড়ে নিরপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা রয়েছে। কলকাতা পুরসভার ৭০ জন কর্মী টালা পাম্পিং স্টেশনে নিযুক্ত রয়েছেন। এ ছাড়াও রয়েছে পুলিশি নজরদারি। পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, পুরসভার নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশের সহযোগিতায় সম্প্রতি টালার এই আবাসন চত্বর থেকেই মাওবাদী সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকার জন্য অনেক বহিরাগত আসেন। ফলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। কলকাতা পুলিশের ডিসি (নর্থ) গৌরব শর্মা বলেন, “এখানে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের ক্যাম্প রয়েছেই। বহিরাগতদের প্রবেশের উপর নজরদারি রাখতে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে।”
পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ওয়ার্ড ছাড়াও আশপাশের অঞ্চলের অনেকে চিকিত্সার জন্য আসেন। সম্প্রতি পুরসভার জল সরবরাহ দফতর থেকেই এখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র রাখার ব্যাপারে আপত্তি উঠেছে। |
|
তা হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নির্মাণের সময় পুরকর্তৃপক্ষ আপত্তি করেননি কেন?
পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “ঠিকই, যখন স্বাস্থ্যকেন্দ্র করার কথা ভাবা হয় তখন এই বিষয়ে চিন্তা করা হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।” পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “জায়গা না থাকার জন্যই পাম্পিং স্টেশন চত্বরের মধ্যে কর্মী আবাসনের এক তলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়া হয়েছিল।”
পুরসভা সূত্রে খবর, নিরাপত্তা ছাড়াও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট। এটি স্থানান্তরিত করার বহু দিনের পরিকল্পনা ছিল। অভিযোগ, পুরসভার জমি জবরদখল হয়ে ছিল। জবরদখল মুক্ত করে একটি দোতলা আধুনিকমানের স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, ইন্দ্র বিশ্বাস রোডের কাছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। |
|
এই চত্বরের শ্রমিক আবাসন ও জলাধারের মধ্যে রয়েছে একটি পাঁচিল। মাঝে একটি প্রবেশপথ। প্রশ্ন উঠেছে, শ্রমিক আবাসনটির কারণে কি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে না?
বিভাসবাবুর কথায়: “এখানে যে শ্রমিকরা থাকেন তাঁদের নামের একটি তালিকা পুরসভার কাছে রয়েছে। কোন বাড়িতে কত জন থাকেন তারও হিসেব রয়েছে। যাঁরা এই সমস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তাঁদেরকে নিরাপত্তারক্ষীরা জিজ্ঞাসাবাদের পরেই ভিতরে প্রবেশ করতে দেন। সন্দেহ হলে দেওয়া হয় না। এটাই নিয়ম। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য আশপাশের এলাকা থেকেও অনেকে আসেন। তাঁদেরকে সব সময় চোখে চোখে রাখা সম্ভব হয় না।”
|
ছবি: শৌভিক দে |
|
|
|
|
|